২৩ অক্টোবর, ২০২০ ১৩:২৪

আইজি ‘অপহরণ’ ইস্যুতে পাকিস্তান সরকার-সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন

অনলাইন ডেস্ক

আইজি ‘অপহরণ’ ইস্যুতে পাকিস্তান সরকার-সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন

সফদারকে সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। নওয়াজ শরীফের মেয়ে জামাই সফদর ও পিটিআই নেতা আলী জাইদি (ডানে)

পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ প্রধান ইনস্পেক্টর জেনারেলকে (আইজি) ‘অপহরণের’ ঘটনায় তীব্র মুখোমুখি পাকিস্তানের সরকার এবং সেনাবাহিনী। দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। 

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরীফের মেয়ে জামাই মুহম্মদ সফদরকে গ্রেফতারের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে আইজিকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জল্পনা চরমে। এমনকি সেনা ও পুলিশের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবরও প্রকাশিত হয়। এমন পরিস্থতিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন 
দেশটির সেনা প্রধান কামার বাজওয়া। 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সূত্র জানিয়েছে, সাফদার ও পিএমএল-এন নেতা মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে সিন্ধু আইজিপিকে বাধ্য করার এই পদক্ষেপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইজাজ শাহের হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় ফেলেছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার ইজাজ শাহকেও। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনও রাজনৈতিক নেতার মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করার অনুমতি দেওয়া যায় না।

এদিকে পাকিস্তানের পিটিআই নেতা ও মন্ত্রী আলী জাইদি এ খবর অস্বীকার করেছেন। একাধিক মিডিয়া দাবি করছে, এ ঘটনার প্রতিবাদে গণছুটিতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন আইজি মুস্তাক মেহর-সহ সিন্ধের পদস্থ পুলিশকর্তারা। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রশাসনের বিরুদ্ধে সিন্ধ প্রদেশে সম্প্রতি একটি মিছিল করে বিরোধীরা। তার নেতৃত্বে ছিলেন নওয়াজ শরীফের জামাই সফদর। সেখানে কার্যত সেনার বিরুদ্ধেও স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই অভিযোগে ওই মিছিলের পরেই সফদরকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই অবশ্য আদালতে জামিনও পেয়ে যান সফদর। 

বলা হয়েছে, সফদরকে গ্রেফতার করতে রাজি ছিল না সিন্ধ পুলিশ। কিন্তু পাকিস্তান রেঞ্জার্স তাকে গ্রেফতারের জন্য আইজির উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। গ্রেফতারির নির্দেশে সই করার জন্য তার উপর নানাভাবে চাপ তৈরি করা হয়। তারপরেও মেহর রাজি না হওয়ায় তাকে অপহরণ করে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ রাজি না হওয়ায় সফদরকেও রেঞ্জার্সই গ্রেফতার করে বলে পুলিশের একটি সূত্রে দাবি।

আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ মাধ্যমের খবর, সিন্ধের ঘটনার জেরে করাচিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেনার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। তাতে করাচিতে ১০ পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর। যদিও এ নিয়ে পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমে এই ধরনের কোনও খবর প্রকাশিত হয়নি। মুখ খোলেননি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কেউ। আন্তর্জাতিক ওই সংবাদমাধ্যমও অসমর্থিত সূত্রে খবর বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে মেহর বলেছেন, তিনি নিজে এবং পদস্থ পুলিশকর্তারা গণছুটিতে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই সেনা প্রধান কামার বাজওয়া ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় সিদ্ধান্ত থেকে কিছুটা পিছিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আপাতত ১০ দিনের জন্য অপেক্ষা করতে বলেছি অফিসারদের। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে তদন্তের জন্য এই সময় দিতে চাই। তবে কে বা কারা তাকে অপহরণ করে রেঞ্জার্সের অফিসে নিয়ে গিয়েছিল, সে বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর