রামনাথ কোবিন্দের পর কে হচ্ছেন ভারতের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি? সে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। সেই গুঞ্জনের মাঝেই গতকাল মঙ্গলবার নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। আর সেই নামেই মহাচমক! হিসেবে নিকেশে যারা ছিলেন, তাদেরকে পাশ কাটিয়ে বিজেপি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বেছে নিয়েছে আদিবাসী নেত্রী দ্রৌপদী মুর্মুকে।
বিজেপির দাবি, রাষ্ট্রপতি পদের জন্য এই প্রথম আদিবাসী সমাজের কোনও প্রতিনিধিকে বেছে নেওয়া হল।
৬৪ বছর বয়সী দ্রৌপদী মুর্মু তৃণমূল থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ। তার রাজনৈতিক জীবন অন্তত আড়াই দশকের। দল থেকে আইনসভা, সব জায়গাতেই বিভিন্ন পদে নানা দায়িত্ব সামলেছেন দ্রৌপদী।
২০০০ ও ২০০৪ সালে ওড়িশার রাইরংপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির বিধায়ক হন দ্রৌপদী। ওড়িশার বিজেপি-বিজেডি জোট সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ অবধি উড়িষ্যার সেচ ও বিদ্যুৎ দফতরে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন দ্রৌপদী।
তারপর ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ অবধি ছিলেন সাম্মানিক (অনারারি) সহকারী শিক্ষক। ১৯৯৭ সালে পৌরভোটে জিতে কাউন্সিলর হন দ্রৌপদী। সেই সাথে রাইরংপুর পৌরসভার ভাইস চেয়ারপার্সনের দায়িত্বও পান তিনি।
বিজেপির একাধিক সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। ২০০২ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত বিজেপির আদিবাসী মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০০৯ অবধি উড়িষ্যা বিজেপির আদিবাসী মোর্চার সভানেত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০১০ সালে ময়ূরভঞ্জ পশ্চিমের জেলা বিজেপি সভাপতি করা হয় দ্রৌপদীকে।
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে পর রাজ্যপালের (গভর্নর) দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। দ্রৌপদী মুর্মু ২০১৫ থেকে ২০২১ অবধি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন দ্রৌপদীর জন্ম। ওডিশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম বিরঞ্চি নারায়ণ টুডু। সাঁওতাল পরিবারের মেয়ে দ্রৌপদী ছোট থেকেই পড়াশুনাতে ছিলেন ভালো।
শ্যাম চরম মুর্মুকে বিয়ে করে সাংসারিক জীবন শুরু করেন দ্রৌপদী। কিন্তু সুখের সংসার দ্রৌপদীর বেশিদিন ভালো ভাবে কাটেনি। দুর্ঘটনায় স্বামী এবং দুই সন্তানকে হারাতে হয় তাকে। কিন্তু ভেঙে পড়েননি। বরং লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। কঠিন লড়াই।
সূত্র: ভারতীয় গণমাধ্যম
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল