২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৯:১৪

কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’, শাম্ভু সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ

অনলাইন ডেস্ক

কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’, শাম্ভু সীমান্তে  পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের মধ্যবর্তী শাম্ভু সীমানায় কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

ভারতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) আইনি নিশ্চয়তা এবং অন্যান্য দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের মধ্যবর্তী শাম্ভু সীমানা। এ ঘটনায় একজন কৃষক নিহত হয়েছেন। 

বুধবার স্থানীয় বেলা ১১টার দিকে শাম্ভু সীমান্ত উত্তাল হয়ে ওঠে। 

সরকারি সংস্থাগুলির আগামী পাঁচ বছর ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে (এমএসপি) নির্দিষ্ট কয়েকটি ফসল কেনার কেন্দ্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে গত সোমবার কৃষক নেতারা ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ‘দিল্লি চলো’ পদযাত্রা আবার শুরু করার ডাক দিয়েছিলেন। তার আগে দু’দিন ‘অস্থায়ীভাবে স্থগিত’ ছিল ওই অভিযান।

সেই কর্মসূচি মেনে শাম্ভু সীমান্তে হাজার হাজার ট্র্যাক্টর, ট্রলি, ক্রেইন নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড আর কড়া নিরাপত্তা বলয়ের দিকে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। ড্রোনের মাধ্যমে ফেলা হয় ওই সেব শেল। মুহূর্তে ধোঁয়ায় ভরে যায় ওই এলাকা।

প্রায় চল্লিশ মিনিট পর থেমে যায় কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়া-সহ অন্যান্য প্রতিরোধের কৌশল। এরপর কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে পঞ্চম দফা বৈঠকের আবেদন জানানো হয়।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “পঞ্চম দফা বৈঠকের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সরকার চায়, বিষয়টির শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান হোক। তৎকালীন এবং দীর্ঘমেয়াদী, দুই দিক থেকেই যেন একটা সমাধান পাওয়া যায় এটাই আমরা চাই।”

এই আন্দোলনে কৃষকদের মূল দাবিগুলো হল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা (এমএসপি), কৃষি ঋণ মওকুব এবং স্বামীনাথন কমিশনের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন, পুলিশ মামলা প্রত্যাহার এবং লখিমপুর খেরি সহিংসতার শিকারদের জন্য ন্যায় বিচারের জন্য আইনি গ্যারান্টি ইত্যাদি।

একই সঙ্গে জানানো হয়েছিল চতুর্থ দফা বৈঠকে যে কয়টি শস্য কেনার কথা বলা হয়েছিল তার পরিবর্তে সব কটি শস্যকে তার আওতায় আনতে হবে। এমএসপিকে আইনিভাবেও নিশ্চিত করতে হবে।

সেই বিষয়গুলির উল্লেখ করে বুধবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা বলেন,“এমএসপি, শস্যের বৈচিত্র, এফআইআর (কৃষকদের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে)-সহ সমস্ত বিষয়ে আমরা কথা বলতে প্রস্তুত। শান্তিপূর্ণ ভাবে আলাপ আলোচনা হোক।”

সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকের কথা জানানো হলে কিছুক্ষণের জন্য ছবি বদলে যায় শাম্ভু সীমান্তে।

পাঞ্জাব কিষান মজদুর সংগঠনের নেতা সরওয়ান সিং পান্ধের বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”

কৃষক নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় বসেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতির বদল হয় আবারও। আন্দোলনকারীদের মধ্যে একাংশ এগোনোর চেষ্টা করলেই তাদের উপর আবার কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়া হয়। আবারও রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শাম্ভু সীমানা।

এর আগে চণ্ডীগড়ে রবিবার রাতে চতুর্থ দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীয়ূষ গোয়েল, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই প্রমুখ।

কৃষক নেতাদের সাথে চতুর্থ দফা আলোচনায় কেন্দ্র সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল পাঁচ বছরের জন্য এমএসপিতে ডাল, ভুট্টা এবং তুলা কিনবে সরকার। কৃষক নেতারা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটা কৃষকদের পক্ষে নয়। একই সঙ্গে তারা এমএসপিকে আইনি নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন।

বুধবার সকালে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে পাঞ্জাব কিষান মজদুর সংগঠনের নেতা সরওয়ান সিং পান্ধের বলেন, “প্রতিটি বিষয়ে আমাদের বৈঠক হয়ে গিয়েছে। এখন কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর