উপ-রাষ্ট্রপতি পদে ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এনডিএ)-এর প্রার্থী হলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল এবং সিনিয়র বিজেপি নেতা চন্দ্রপুরম পোন্নুস্বামী (সিপি) রাধাকৃষ্ণণ। রবিবার ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে বিজেপি।
এদিন দিল্লিতে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন। পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি পদে যদি সিপি রাধাকৃষ্ণণ জয়ী হন, তবে তিনি জগদীপ ধনকরের স্থলাভিষিক্ত হবেন। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে গত মাসেই ওই পদ থেকে ইস্তফা দেন ধনকর।
সংসদের রাজ্যসভা এবং লোকসভা- উভয় কক্ষের সম্মিলিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা ৭৮৬। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে গেলে সেই প্রার্থীকে ৩৯৪টি ভোট পেতে হবে। সেক্ষেত্রে উভয় কক্ষে এনডিএ-র সম্মিলিত সংখ্যা ৪২২টি, এরমধ্যে লোকসভায় ২৯৩ এবং রাজ্যসভায় ১২৯ জন সদস্য। ফলে উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হলে এনডিএ প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
সর্বসম্মতভাবে রাধাকৃষ্ণণ'কে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে মোদি লিখেছেন জনজীবনে তার দীর্ঘ বছর ধরে, সিপি রাধাকৃষ্ণণ তার নিষ্ঠা, নম্রতা এবং বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নিজেকে আলাদা করে তুলেছেন। বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন সময়ে, তিনি সর্বদা সমাজসেবা এবং প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়নের উপর মনোনিবেশ করেছেন। তিনি তামিলনাড়ুর তৃণমূল স্তরে ব্যাপক কাজ করেছেন। আমি আনন্দিত যে এনডিএ পরিবার তাকে আমাদের জোটের উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত প্রার্থী সিপি রাধাকৃষ্ণণ।
ইতোমধ্যেই এনডিএ নেতাদের মধ্যে রাধাকৃষ্ণণ'কে সমর্থন করেছেন লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) প্রধান চিরাগ পাসোয়ান, রাষ্ট্রীয় লোকদলের জয়ন্ত সিং, জনসেনা পার্টির প্রধান পবন কল্যাণ, তেলেগু দেশম পার্টির প্রধান এন. চন্দ্রবাবু নাইডু এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা নেতা জিতেন রাম মাঝি প্রমুখ।
১৯৫৭ সালের ২০ অক্টোবর তামিলনাড়ুর তিরুপুরে জন্মগ্রহণ করেন সিপি রাধাকৃষ্ণণ। দক্ষিণ ভারতে জন্ম হলেও হিন্দি ভাষায় যথেষ্ট পারদর্শী তিনি। বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এবং ভারতীয় জনসংঘের সঙ্গে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন সিনিয়র নেতা ছিলেন এবং বর্তমানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল পদে রয়েছেন। ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই তিনি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল পদে আসীন হন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদে ছিলেন। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত তেলঙ্গনার রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত পুদুচেরির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অতিরিক্ত দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তামিলনাড়ুর রাজ্যের বিজেপি সভাপতি ছিলেন সিপি রাধাকৃষ্ণণ। কোয়েম্বাটুর লোকসভা আসন থেকে দুই বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম