ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন সফরকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চূড়াচাঁদপুরের পিয়ারসনমুন এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুর সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। তার আগমন উপলক্ষে শহরজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সাজানো হচ্ছে পিয়ারসনমুন এলাকা, যেখানে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর একটি ঘাঁটি রয়েছে। সেখানকার হেলিপ্যাডেই মোদীকে বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে পিয়ারসনমুন থেকে চূড়াচাঁদপুর শহরের সমাবেশস্থল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ব্যানার, পতাকা ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করেই স্থানীয়দের একটি দল এসব সাজসজ্জা ভাঙচুর শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তেজিত জনতা একাধিক ব্যানার ও পতাকা ছিঁড়ে ফেলে এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছেন কি না বা কোনো গ্রেফতার হয়েছে কি না—সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, মোদীর সফর ঘিরে চূড়াচাঁদপুরে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সফরের দিন রাজ্যজুড়ে মোতায়েন থাকবে প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এর মধ্যে থাকবেন পুলিশ, সিআরপিএফ, বিএসএফ ও আসাম রাইফেলসের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, জনজাতি অধ্যুষিত মণিপুরে ২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২১ মাস ধরে চলা এই সহিংসতায় অন্তত ২৫৮ জন প্রাণ হারান এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। অবশেষে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আসে।
সমালোচকরা বলছেন, দুই বছরের দাঙ্গা চলাকালীন নরেন্দ্র মোদী একবারও রাজ্য সফরে যাননি। আর সহিংসতা বন্ধের পর এই প্রথম তিনি মণিপুরে যাচ্ছেন, যা অনেকের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ