শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভয়াবহ প্রতিবেদন, বিপাকে জনসন

ভয়াবহ প্রতিবেদন, বিপাকে জনসন

পার্লামেন্টের চাপে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকার আরও সমালোচনার মুখে পড়েছে। এদিকে স্কটল্যান্ড হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ আইনসিদ্ধ নয়। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দিনকাল ভালো যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে শুধু একের পর এক পরাজয়ের মুখ দেখতে হচ্ছে তাকে। বিশেষ করে পার্লামেন্টের সঙ্গে সংঘাতের যে মূল্য তাকে দিতে হচ্ছে, তা মোটেই সুখকর নয়। অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার আগে সংসদ এক প্রস্তাব পাস করে সরকারকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতি সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল। বুধবার রাতে প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার সেই ‘অপারেশন ইয়েলোহ্যামার’ নথিপত্র পড়ে এমন পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র সম্পর্কে জানতে পারছেন ব্রিটেনের মানুষ।

কোনো চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগ করলে ব্রিটেনের জনজীবন নানা ক্ষেত্রে ব্যাহত হবে। ইংলিশ চ্যানেল পেরোতে গেলে শুল্ক ও অন্যান্য জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ থমকে যাওয়ার ফলে বিশাল মূল্যবৃদ্ধি হতে চলেছে। বিদ্যুতের মাশুলও আচমকা বেড়ে যাবে। সামাজিক অস্থিরতা, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। গত ২ আগস্ট এই নথি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর আগে দ্য সান্ডে টাইমস তার কিছু অংশবিশেষ প্রকাশ করেছিল। সমালোচকদের মতে, এই রিপোর্টের ফলে সরকারের প্রস্তুতির অভাবও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার অবশ্য দাবি করছে, রিপোর্ট লেখার পর থেকে প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী ‘যে কোনো মূল্যে’ ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন, সেই মনোভাবের তীব্র সমালোচনা শোনা যাচ্ছে? এমনকি তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছে। লেবার দলের ব্রেক্সিট বিশেষজ্ঞ কির স্টার্মার বলেন, সরকার এমন সব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ও মানুষকে অন্ধকারে রেখে অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে। প্রায় এক মাস সংসদ মুলতুবি রেখে বরিস জনসন আইন  ভেঙেছেন বলে রায় দিয়েছে স্কটল্যান্ড হাই কোর্ট। সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করায় আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে। সেই রায়ও যদি সরকারের বিপক্ষে যায়, সেক্ষেত্রে আবার সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে রানীকে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছিলেন, এমন অভিযোগ আরও জোরদার হচ্ছে। এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল বলেছেন, ব্রিটেন এখনো চুক্তিসহ ইইউ ত্যাগ করতে পারে। সেই লক্ষ্যে জার্মানি সরকার সবরকম উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত। বিবিসি, ডয়েচেভেলে।

সর্বশেষ খবর