ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রপ্রধানদের এক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গাজায় মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের যৌথ চুক্তির পর্যালোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি জানান, ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এখন এই সংকটে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে ‘খোলামেলা সংলাপ’র প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। এ সম্মেলনে কস্তা ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আরও সমন্বিত কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্রে একই ধরনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা তৈরি করা প্রয়োজন নেই। বরং দক্ষতা ও ন্যায্যতা প্রয়োজন।’ ইউক্রেনের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ককে সরাসরি ইউরোপের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া এখন জরুরি। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনও গাজার মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় পরিস্থিতি ভয়াবহ ও সহ্যের বাইরে চলে গেছে। অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো দরকার।’ তিনি জানান, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। তবে একই সঙ্গে ইইউ ‘সমতা পুনঃস্থাপন তালিকা’ তৈরি করছে, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়। ভন ডার লিয়েন বলেন, ‘আমরা একটি চুক্তির জন্য প্রস্তুত। তবে সন্তোষজনক সমাধান না এলে ইউরোপীয় স্বার্থ রক্ষায় আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে ইউরোপীয় কাউন্সিল লিবিয়ার পরিস্থিতি এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও অভিবাসনের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ জানায়। বিশেষ করে তুরস্ক-লিবিয়া সমুদ্রসীমা নির্ধারণসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারককে তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা চলছেই। ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। -আলজাজিরা