কয়েক মাস পরেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ২০২৪ সালে ভারতে লোকসভার নির্বাচন। তার আগেই ভোটারদের মন পেতে নতুন প্রকল্পের ঘোষণা দিল রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন এ প্রকল্পের নাম 'দিদির সুরক্ষা কবচ'।
সোমবার কলকাতার নজরুল মঞ্চ থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মমতার ভাতিজা তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকশি। এদিনের অনুষ্ঠান থেকে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' নামক নতুন লোগোরও উন্মোচন করা হয়।
মূলত জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবেই এই প্রকল্প। আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' নিয়ে পথে নামছে তৃণমূল এবং আগামী ৬০ দিন অর্থাৎ দুমাস ধরে চলবে এই কর্মসূচি।
এদিনের মঞ্চ থেকে দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মমতার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জির বলেন, কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, যুবশ্রী, ঐক্যশ্রী, লক্ষীর ভান্ডার, আবাস যোজনাসহ ১৫ টি সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। এই লক্ষ্যে দিদির দূত অ্যাপ আনা হয়েছে গুগল প্লে স্টোরে। ৬০ দিন ধরে চলবে এই কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আওতায় তৃণমূলের সাড়ে ৩ লাখ স্বেচ্ছাসেবক রাজ্যের প্রতিটি মানুষের বাড়িতে যাবেন। তাদের সাথে কথা বলে সরকারি প্রকল্পের সমস্ত কিছু জানাবেন। কোন প্রকল্পের সুবিধা পেতে অসুবিধা হচ্ছে কিনা তা জানার চেষ্টা করবেন।' মূলত এভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনসংযোগে নেমে পড়তে চলেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলটি।
অভিষেক আরো বলেন, 'আগামী দুই মাস ধরে দলের প্রায় সাড়ে ৩০০ জন রাজ্য স্তরের নেতা ১০ দিন করে গ্রামে গিয়ে রাত্রিযাপন করবেন। তাদের অভাব-অভিযোগ, মতামত শুনবেন। তিনি চলে যাওয়ার পর সরকারের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কিনা তা সুনিশ্চিত করতে সেই বাড়িতে পৌঁছবেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।
এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'দুয়ারে সরকারের আদলে এবার মানুষের দরজায় তৃণমূল কংগ্রেস। ওরা (আইটি টিম) নাম দিয়েছে সুরক্ষা কবচ। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই কর্মসূচির আওতায় আমাদের সাড়ে তিন লাখ কর্মী দুই কোটি পরিবারের বাড়িতে যাবে এবং ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবে। এটা একটা বড় কাজ। কোন বাড়ির লোক হয়তো করতে পারেন না সে ক্ষেত্রে তাকে তার আবেদনটা করে দিতে হবে এক্ষেত্রে কোনো অর্থ লাগবে না।'
গ্রামে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের রাত কাটানো প্রসঙ্গে মমতা বলেন, 'এগুলো খুব ভালো জিনিস। ছোটবেলায় আমরা দেখতাম গ্রামে গিয়ে আড্ডা মারতো। কিন্তু বর্তমানে মানুষের কাজে এত ব্যস্ততা যে, এগুলো কমে গেছে। সেক্ষেত্রে আমরা সকলে যদি একটা জায়গায় যাই এবং পিকনিকের মতো অনুষ্ঠান করি সেই গ্রামের লোকেরা খুশি হবে। কোন জায়গায় গিয়ে তার ইতিহাস জানা ধর্মীয় লোকেদের সাথে পরিচয় করা স্বাধীনতা সংগ্রামী বুদ্ধিজীবীদের সাথে পরিচয় করা। সময় পেলে আমিও করবো।'
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগেও ঠিক একইভাবে 'দিদিকে বলো'র মত প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। আর এবার পঞ্চায়েত কে পাখির চোখ করে একই রকম ভাবে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' চালু করেছে তৃণমূল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল