শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাঠে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

মাঠে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পদচারণে ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম। জেলায় জোরালো হতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। কথা বলে জানা যায়, যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নিতে চান ভোটার সাধারণ। ঠাকুরগাঁওয়ে সংসদীয় আসন তিনটি। এর দুটি আওয়ামী লীগ ও একটি জাতীয় পার্টির দখলে।

ঠাকুরগাঁও- : এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। আগামী নির্বাচনে তিনি আবারও দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অরুণাংশু দত্ত টিটো, জেলা আইন বিষয়ক সম্পাদক ইন্দ্রনাথ রায়, জেলা আওয়ামী লীগের শাহেদুল ইসলাম সাহেদ, আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও প্রাক্তন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা আক্তার মোল্লা। বিএনপির নেতারা বলছেন, এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতী সন্তান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই এ আসনে। এ ছাড়া এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডির) জেলা সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি মনসুর আলী। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলার সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রাজি স্বপন চৌধুরী। ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ইমরান হোসেন দলীয় মনোনয়ন চেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

ঠাকুরগাঁও- : বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ দবিরুল ইসলাম। আবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। অনেকে মনে করছেন, এমপি পুত্র ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজনও মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন, জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম টুলু, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার রায়। এই আসনটি দীর্ঘদিন ধরেই দবিরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়ে আসছেন। সব নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর সঙ্গে। কিন্তু কখনো নির্বাচিত হতে পারেনি জামায়াত। এই আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাবা প্রয়াত মির্জা রুহুল আমিন (চোখা মিয়া) এক সময় সংসদ সদস্য ছিলেন। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধারণা, মির্জা ফখরুল এ আসনে নির্বাচন করতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে মির্জা ফখরুল কিছু বলেননি। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জেড মর্তুজা চৌধুরী তুলা দলীয় মনোনয়ন চান। জেলা জামায়াতের আমির মৌলানা আবদুল হাকিম নির্বাচন করতে পারেন।

ঠাকুরগাঁও- : বর্তমানে এই আসনে সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হককে পরাজিত করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজ উদ্দীন আহম্মদ। তখন থেকেই আসনটি হাতছাড়া হয় নৌকা প্রতীকের। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান ইমদাদুল হক, জাতীয় পার্টি থেকে হাফিজ উদ্দীন আহম্মদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে শহীদুল্লাহ শহীদ। কিন্তু আসনটি মহাজোটের রাজনীতিতে শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীকে ছেড়ে দেওয়ায় কেন্দ্রের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। পরে নির্বাচনে বিএনপিকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন। তিনি আগামী নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী হবেন। নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটা। মাঠে বসে নেই ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াসিন আলীও। বিএনপি এ আসনে কখনই জয়ী হতে পারেনি। তবু আশা ছাড়ছে না দলটি। এখন পর্যন্ত বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জাহিদুর রহমান জাহিদকে মাঠে তৎপর থাকতে দেখা যাচ্ছে। দলীয় কর্মীদের নিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডা থেকে শুরু করে এলাকার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর