ওয়াশিংটনে এক বিরল বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা একত্র হন। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজতেই এ বৈঠক হয়। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনার পরও শান্তিচুক্তি বা যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
১৮ আগস্ট হোয়াইট হাউসে হওয়া এই বৈঠকে অংশ নেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রন, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এবং ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে। ট্রাম্প নিজেই মন্তব্য করেন, হোয়াইট হাউসে একসঙ্গে এত প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট আগে কখনো আসেননি।
বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। তবে অন্য নেতারা মনে করেন, দ্রুত আলোচনায় গেলে পুতিন সুবিধা নিতে পারেন। জার্মানির চ্যান্সেলর মের্ৎস উদাহরণ টেনে বলেন, রাশিয়াকে ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল দিয়ে দেওয়া মানে যেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ছেড়ে দেওয়া।
বৈঠকের একপর্যায়ে ট্রাম্প বৈঠক থামিয়ে পুতিনকে ফোনে ৪০ মিনিট কথা বলেন। পরে তিনি জানান, পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়েছেন। এ বৈঠক আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে। তবে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি বলেন, আগের অনেক সংঘাত সমাধানে যুদ্ধবিরতির দরকার হয়নি।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি চান। এ বিষয়ে ট্রাম্প কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব দেখান। এতে জেলেনস্কি আশাবাদী হয়ে ওঠেন। নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টি ভবিষ্যতে শান্তিচুক্তির আলোচনায় রাশিয়ার জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অস্ত্র কেনার বিষয়েও আলোচনা হয়। জানা গেছে, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এর জন্য অর্থ দেবে ইউরোপীয় দেশগুলো।
ফেব্রুয়ারির সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে কঠিন অভিজ্ঞতার পর এবার জেলেনস্কি নরম কৌশল নিয়েছেন। তার সঙ্গে একসঙ্গে হোয়াইট হাউসে যাওয়া সাতজন ইউরোপীয় নেতাও সমর্থন জুগিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘এতে প্রমাণ হয়েছে, ইউক্রেন একা নয়।’
তবে ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রস্তাবে মস্কোর সম্মতি পাওয়া কঠিন হবে। জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা বলেন, রাশিয়া ইউরোপীয় সেনাদের ইউক্রেনে উপস্থিতি মানতে চাইবে না। তার মতে, শেষ পর্যন্ত পুতিনই না বলবেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল