বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীতে ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা, অগ্নিসংযোগ, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২৯০টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার মধ্যে হত্যা মামলা রয়েছে ৬২টি। ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের করা হয় এসব মামলা। এসব মামলার মধ্যে ৬২টি হত্যা মামলা ছাড়া বাকি ২২৮টিতে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করেছে পুলিশ।
এসব মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৩ হাজার ৫৬ জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও অনেককে। এসব মামলার মধ্যে হত্যা মামলা ছাড়া বাকি ২২৮টিতে সম্প্রতি সব আসামির অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
আন্দোলনের সময় হওয়া ৬২ হত্যা মামলার অধিকাংশই আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে আন্দোলনকারীদের নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা। তবে এসব মামলায় পুলিশের গুলিতে আন্দোলনকারীরা নিহত হলেও উল্টো আন্দোলনকারীদেরই আসামি করা হয়। এসব হত্যা মামলার মধ্যে পুলিশ নিহত হওয়ারও কয়েকটি মামলা রয়েছে। আন্দোলনকারীদের নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলাগুলোয় এখন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
নাশকতার ২২৮ মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, বিএনপি নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিনুল হক, জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ প্রমুখ।
গ্রেপ্তার হন ২ হাজার ৯৬৭ জন : ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি ও হত্যার অভিযোগে ২৯০টি মামলা করা হয়। অধিকাংশ মামলার বাদী ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ৬২টি হত্যা মামলা। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হন ২ হাজার ৯৬৭ জন। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা সবাই সরকার পতনের পর জামিনে মুক্তি পান।
পুলিশের ভাষ্য : চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিরা জড়িত নন। এসব ঘটনা অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সংঘটিত হওয়ায় তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্ত ফেলে না রেখে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পক্ষে মত দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ভবিষতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের তথ্য পাওয়া গেলে মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হবে।