রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কার্যত দখলে নিয়েছেন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। টানা ছয় কার্যদিবস ধরে প্রবেশমুখে মানবঢাল তৈরি করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে অফিসে ঢুকতে দিচ্ছেন না তাঁরা। ব্যাংকের শত শত কর্মকর্তা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে বাধার মুখে পড়ছেন। তদারকি সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে নজিরবিহীন নিয়োগ দুর্নীতির প্রমাণ মেলে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থেকে তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবুর পিএস মোহাম্মদ পিয়ারুর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা নিয়ে কর্মকর্তাদের নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে চিহ্নিত ১ হাজার ৪১৪ কর্মকর্তার মূল্যায়ন পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৫৪৭ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ছাঁটাই হওয়া অধিকাংশই ছিলেন পিয়ারুর তত্ত্বাবধানে নিয়োগপ্রাপ্ত।
২৮ জুলাই চাকরিচ্যুতরা প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান শুরু করেন। সূত্র জানান, আন্দোলনে এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত অন্য ব্যাংকের চাকরিচ্যুতরাও যুক্ত হয়েছেন। অভিযোগ আছে, আন্দোলনকারীদের থাকার ব্যবস্থা ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে গ্রুপটির নয়াপল্টনের গ্যালকো অফিস। আন্দোলনের পেছনে সাবেক চেয়ারম্যান লাবুর পিএস পিয়ারুর সক্রিয় ভূমিকারও প্রমাণ মিলেছে।
এক কর্মকর্তা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘চাকরিচ্যুতরা আমাদের কাউকে অফিস করতে দিচ্ছেন না। বলপ্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে তারা অপরাধ করছেন।’
পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীদের গতিবিধি তীক্ষè নজরদারিতে রয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া এখনই বলপ্রয়োগে নামছে না পুলিশ।
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়মে সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংস্কারের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলোতে চাহিদার অতিরিক্ত নিয়োগ ও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এখন মানবিকতার দোহাই দিয়ে গোটা ব্যাংকিং সেক্টর অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে।
চাকরিচ্যুতরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অন্যায়ভাবে কোনো নোটিস ছাড়াই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।