যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন করে পরিচ্ছন্ন ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে ১৯ কোটি টাকা খরচ করে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট (ওয়াশপিট) কিনেছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়। কিন্তু দক্ষ জনবলের অজুহাতে সেটি ফেলে রাখায় নষ্ট হচ্ছে অটোমেটিক মেশিনটি। প্রতিদিন নোংরা ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে ট্রেন পরিচ্ছন্নতার নামে ঠিকাদারের পেছনে বছরে দেড় কোটি টাকা খরচ করছে রেলওয়ে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর রাজধানীর কমলাপুর ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ওয়াশপিট উদ্বোধন করা হয়। তখন দুটি প্ল্যান্ট স্থাপনে ব্যয় হয়েছিল ৩৮ কোটি টাকা। স্থাপনের সময় বলা হয়েছিল, অত্যাধুনিক এই ওয়াশিং প্লান্টের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের ছাদ, চারপাশ, ভিতর এবং আন্ডারগিয়ার সুচারুভাবে পরিষ্কার করা যাবে। ওয়াশপিটের মাধ্যমে প্রতিটি প্লান্টে প্রতিদিন এক লাখ লিটার পানি সাশ্রয় হবে এবং ব্যবহৃত ৭০ ভাগ পানি রিসাইকেলের মাধ্যমে ফের ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। বিদ্যুৎচালিত এই প্লান্টের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটে ১৪ কোচের একটি ট্রেন ধোয়া ও পরিষ্কার করার কথা ছিল। পানিতে শুধু জীবাণুনাশক ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হবে। রেলওয়ে সূত্রমতে, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় ট্রেন পরিষ্কার ব্যবস্থার পর্যাপ্ত সুবিধা ও প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল না থাকলেও ব্যয়বহুল এই প্লান্টটি অনেকটা প্রস্তুতিহীন অবস্থায় চালু করা হয়। এরপর প্রায় ২০ মাস ওয়াশপিটটি অনেকটা নামকাওয়াস্তে চলেছে। তারপর নানা জটিলতায় ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল এই প্লান্টটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার ম্যানুয়ালি ট্রেনগুলো ধোয়া ও পরিষ্কার করা হচ্ছে ঠিকাদারের মাধ্যমে আউটসোর্সিং শ্রমিক দিয়ে। এতে বছরে অতিরিক্ত প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শুধু অর্থ লোপাটের উদ্দেশ্যে এ ধরনের মেশিন কেনা হয়, যা ব্যবহারের উপযোগিতা বিবেচনা করা হয়নি। ওই সময় রেল মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি চট্টগ্রামের (রাউজান) সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর ব্যক্তিগত আগ্রহে এই ওয়াশপিট দুটি আমেরিকা থেকে কেনা হয়েছিল। ১৯ কোটি টাকা খরচে বসানো ওয়াশিং প্লান্টটি এখন ধুলাবালিতে ঢেকে গেছে। ঠিকমতো ট্রেন পরিষ্কার না করায় হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।