দেশে রাজনৈতিক সংকট নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয়। একটি গোষ্ঠী দেশকে অকার্যকর করতে পরিকল্পিতভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে নাশকতামুলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। যাতে তারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। তিনি বলেন, আমরা দেশবাসীকে এসব নাশকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।
আজ মঙ্গলবার দপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে হানিফ এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, দেশে সংকট নেই, বোমাবাজি, পেট্রল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মারা কি রাজনৈতিক সংকট? এটা রাজনীতির অংশ হতে পারে না। এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আর এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রাজনৈতিকভাবে নয়, প্রশাসনই মোকাবিলা করবে।
হানিফ বলেন, পেট্রল বোমার মাধ্যমে দেশে জঙ্গিবাদী রাজনীতির উত্থান হচ্ছে। ফ্রান্স, বেলজিয়ামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশগুলোর সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই যুদ্ধ যদি ন্যায় সঙ্গত হয়, তাহলে আমাদের দেশের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই ন্যায় ও যৌক্তিক।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই হানিফ বলেন, গতকাল বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রমাণ করেছেন তিনি অবরুদ্ধ নন। অবরুদ্ধের নামে নাটক করেছেন। আমরা এতদিন যে দাবি করেছি, তাই প্রমাণিত হয়েছেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ তার অবরোধ প্রত্যাখ্যান করায় তার দলের নেতা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা করে আন্দোলনের মাত্রা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র প্রমাণ করতে চায়।
‘সরকার নাশকতামুলক কর্মকাণ্ড করছে’ বিএনপি নেত্রীর এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ছাত্রদল নেতা আকরাম পেট্রল বোমাসহ ধরা এবং তার স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপি জড়িত। তাদের শীর্ষ নেতাদের নিদেশেই এমন কর্মকাণ্ড হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে হানিফ অভিযোগ করেন, রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা হয়েছে ১৩ জানুয়ারি। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া হরতাল ডাকলেন ১৫ তারিখে। কেন? কারণ ওইদিন তার দুর্নীতির মামলার হাজিরা ছিলো। তিনি জানেন এই বিচার শেষ হলে শাস্তি হবে। তাই মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ওইদিন হরতাল ডেকেছিলেন। তিনি বলেন, যখনই তার মামলার হাজিরা থাকে তখনই তিনি কোনো না কোনো পরিকল্পিত ঘটনা ঘটিয়ে হাজিরা থেকে রেহাই পেতে হরতাল-অবরোধ ডাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক আবদুল মান্নান খান ও ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভুইয়া ডাবলু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমারা উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম আমিন, সুজিত রায় নন্দী ও সহ-সম্পাদক জোবায়দুল হক রাসেল প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ জানুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা