নারী হত্যা ও ধর্ষণ মামলায় সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন চাঁদপুরের আদালত। খুলনার এক নারীকে চাঁদপুরে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আজ বুধবার এ আদেশ দেন আদালত।
সাত বছর আগের ওই ঘটনার রায় ঘোষণা করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুনাভ চক্রবর্তী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি রসু খাঁকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৮ সালের ১৮ অগাস্ট ফরিদগঞ্জের নানুপুর খালপাড়ে খুলনার দৌলতপুরের সজলা গ্রামের সাহিদা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন রসু। পরে পুলিশ সাহিদার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।
চাঁদপুরের মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ ভালবাসায় পরাস্ত হয়ে এক সময় সিরিয়ার কিলারে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের চিত্র বেরিয়ে আসে। নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ নারী হত্যার কথা। তার টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। কিন্তু ফরিদগঞ্জে পুলিশের হাতে ধরা পরার পর তার সেই আশা গুঁড়েবালিতে পরিণত হয়। রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী। ভালোবাসার অভিনয় করে নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েদের ঢাকার সাভার ও টঙ্গী এলাকা থেকে চাঁদপুরে এনে প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে ধর্ষণের পর তাদের হত্যা করেছে। হত্যার শিকার ওই মেয়েদের অধিকাংশেরই সঠিক নাম ঠিকানা বা পরিচয় আজো জানা যায়নি। এলাকাবাসী তার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।
রসুকে গ্রেপ্তারের পর চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ থানায় মোট ১০টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে একটি হত্যা এবং অন্যগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে করা হয়েছে। মামলাগুলো বিচারের জন্য চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে একটি মামলার রায়ে রসু খালাস পেয়ে যায়। এ অবস্থায় তার বাদবাকি মামলাগুলো চাঁদপুর আদালতে পুনরায় ফেরত পাঠায় ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি এবং অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে আটটি মামলার বিচার চলছে। এর মধ্যে টঙ্গীর গার্মেন্টকর্মী সাহিদা হত্যা মামলার রায় দেয়া হলো আজ।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ এপ্রিল, ২০১৫/ রোকেয়া/ রশিদা