নৌ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিট থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘটের ফলে অচল হয়ে পড়েছে মংলা বন্দর। বন্দরে অবস্থানরত গম, সার, ক্লিংকার, পাথর, মেশিনারিসহ ১২টি দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় মংলা বন্দরের সাথে সারাদেশের নৌ যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। ধর্মঘটের কারণে লাইটারেজ জাহাজ না পাওয়ায় মঙ্গলবার সকালের পালা থেকে মংলা বন্দরে জাহাজের পণ্য খালাসে কোন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যায়নি। মংলা বন্দর চ্যানেলে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় অলস পড়ে রয়েছে বিদেশি জাহাজগুলো। বেকার হয়ে পড়েছে বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা। নৌযান শ্রমিকরা মংলার পশুর, শরণখোলার বলেশ্বর ও মোড়েলগঞ্জের পানগুছি নদীতে নোঙ্গর করে রেখেছে কয়েকশ' কার্গো, কোস্টার, বার্জসহ লাইটারেজ জাহাজ। ফলে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মংলা বন্দর ব্যবহারকারী, আমদানীকারক ও ব্যবসায়ীরা।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ব্যবস্থাপক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ সোহাগ জানান, নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘটের ফলে মংলা বন্দরে অবস্থানরত গম, সার, ক্লিংকার, পাথর, মেশিনারিসহ ১২টি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে মংলা বন্দরে জাহাজ জট বাড়ার পাশাপাশি বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বন্দর ব্যবহারকারী ও আমদানীকারকরা।
নৌ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক ওয়েজুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকায় বৃদ্ধি, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ পুননির্ধারণ, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নৌপথে সন্ত্রাসী-ডাকাতি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবিতে মংলা বন্দরসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে নৌযান শ্রমিকেরা। এতে মংলা বন্দরসহ সারাদেশে পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার নৌযানের ২ লাখ শ্রমিক তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ ধর্মঘট পালন করছে। তবে তেলবাহী ট্যাংকারের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করায় ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকছে প্রায় ৫ হাজার অয়েল ট্যাংকার।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ