ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা ও এইডসের মতো প্রাণঘাতী রোগ নির্মূলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার কানাডার মন্ট্রিলে ‘ফিফথ রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। শনিবার প্রধানমন্ত্রী প্রেসসচিব ইহসানুল করীম এ তথ্য জানিয়েছেন জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২০ সাল নাগাদ ম্যালেরিয়া নির্মূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং গত দু’দশক ধরে এইচআইভি/এইডস প্রাদুর্ভাবের নিম্ন হার বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৪ সাল থেকে প্রায় ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেছি এবং এর মধ্যে ৯৪ শতাংশ রোগীর সফলভাবে চিকিৎসা করা হয়েছে। আমরা এই সাফল্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে বালিকা ও নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের যুক্ত করার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকার বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিষয় চিহ্নিত করেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত শক্তিশালীকরণে গ্লোবাল ফান্ডসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গ্লোবাল ফান্ড বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন সহায়তা করেছে যা, মূলতঃ ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা ও এইচআইভি আক্রান্তদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করছে।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইসব প্রাণঘাতী রোগের মহামারী নির্মূলে তহবিল সংগ্রহের লক্ষে পঞ্চম জিবি সম্মেলনের আয়োজন করেছে কানাডা।
আয়োজকদের মতে, এই সম্মেলন বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি রোগ এইডস, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মার মহামারী নির্মূল করতে সারা বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া নির্মূলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে এই সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ, স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
এই সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে প্রাণঘাতী রোগ নির্মূলে বিশ্বের সকল দেশকে একত্রে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মারাত্মক এই তিনটি রোগের কবল থেকে ৮ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় ১৩শ’ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের মধ্যে ৩০-৩২ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় ৪ হাজার ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল সঙগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে পঞ্চম রিপ্লেনিসমেন্ট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার ফলে এসব দেশের ২৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে।
এই বিনিয়োগ লাখ লাখ মানুষের জন্য বিশেষ করে গরীব দেশগুলোর নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) থেকে জন্ম নেয়া প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্লোবাল ফান্ড। এই ফান্ড বিশ্বজুড়ে রোগের ভারে জর্জরিত ১০০ টিরও বেশি দেশে সহস্রাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ১৭ মিলিয়নেরও বেশি জীবন রক্ষায় অংশীদার।
প্রতি তিন বছরে একবার গ্লোবাল ফান্ডের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে পূর্ববর্তী সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম