সুন্দরবনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীর ও সাগর বাহিনী নামের দুই বনদস্যু বাহিনী। মুক্তিপণের দাবিতে ফ্রি স্টাইলে জেলেদের অপহরণ করে যাচ্ছে এ দুই বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে গোটা সুন্দরবন নিয়ন্ত্রন করছে তারা। সম্প্রতি মাস্টার বাহিনীসহ কয়েকটি বনদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পন করার পর নিজেদের আওতা বৃদ্ধি করেছে জাহাঙ্গীর ও সাগর বাহিনী।
গত এক সপ্তাহে তিন দফায় ওই দুই বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছেন ৫৫ জেলে। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। শত চেষ্টা করেও এ দুই বনদস্যু বাহিনীর নাগাল পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্যরা পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুধমুখি ও ভাইজোড়া খাল থেকে আরও ১২ জেলেকে মুক্তিপনের দাবিতে অপহরণ করেছে। এ সময় বনদস্যুরা জেলেদের মারপিট করে নৌকায় থাকা মাছ ও বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একই বাহিনীর সদস্যরা ১৪ সেপ্টেম্বর হারবাড়িয়া সংলগ্ন ধানসিদ্ধির চর এলাকা থেকে ২০ জেলেকে অপহরণ করে। ৯ সেপ্টেম্বর ঠিক একই এলাকা থেকে বনদস্যু সাগর বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার হন আরও ২৩ জেলে। অপহৃত এ সকল জেলেদের কেউ কেউ মুক্তিপন দিয়ে ফিরে এসেছেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মজিবর তালুকদার জানান, এ বছর নদী-সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন জেলে-মহাজনরা। কিন্তু বনদস্যুদের মুক্তিপণের দাবি মেটাতে গিয়ে আবার নিঃস্ব হতে হচ্ছে। নির্বিঘ্নে মাছ শিকারের জন্য দুই দস্যু বাহিনীকে নির্মূলের দাবি জাবি জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
জেলে অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে মংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লে. এম ফরিদউজ্জামান বলেন, শুক্রবার ভোর থেকেই কোস্টগার্ড সদস্যরা জেলেদের উদ্ধারে সুন্দরবনের হারবাড়িয়া, নলিয়ান ও কোকিলমণির এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ