মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা সেল গঠন করেছে সরকার।
রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অধীনে গঠিত এই সেল গঠন করে অফিস আদেশ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) মো. সামছুর রহমান সেলের প্রধান সমন্বয়ক এবং যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-২) মো. শফিকুর রহমান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেলে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে থাকবেন উপসচিব (রাজনৈতিক-১) আবু হেনা মোস্তফা জামান। উপসচিব (রাজনৈতিক-২) মোহাম্মদ ফারুক-উজ-জামান প্রথম বিকল্প কর্মকর্তা ও উপসচিব (সীমান্ত-৩) মনির হোসেন চৌধুরী দ্বিতীয় বিকল্প কর্মকর্তা হিসবে সেলে দায়িত্ব পালন করবেন।
অফিস আদেশে বলা হয়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সহিংসতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের ওপার হতে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশের কারণে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলাসহ সন্নিহিত সীমান্তবর্তী এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধনের সুবিধার্থে রোহিঙ্গা সেল গঠন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, পুশব্যাক-সম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে সেল। সম্প্রতি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের শুমারি (বায়োমেট্রিকসহ) ও সর্বশেষ অগ্রগতি, সন্নিহিত সীমান্তবর্তী এলাকায় সর্বশেষ পরিস্থিতি, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করবে।
সেলের কার্যপরিধিতে আরও বলা হয়েছে, চিহ্নিত ও নির্ধারিত স্থানের মধ্যে রোহিঙ্গাদের অবস্থান সীমাবদ্ধ রাখা-সম্পর্কিত গৃহীত সর্বশেষ ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গাদের আবাসন ও মানবিক সহায়তা দেয়া সংক্রান্ত কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে সেলকে। এছাড়া মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রম-সম্পর্কিত অগ্রগতি, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশ অংশে বিদেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সফর-সম্পর্কিত তথ্যাদি এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা-সম্পর্কিত তথ্যাদিও রোহিঙ্গা সেল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২৫ আগস্ট দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলায় মিয়ানমারের ১১ জন পুলিশ নিহত হওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। সেনা অভিযানে কমপক্ষে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ এটাকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করছে। রাখাইন রাজ্য থেকে তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা অভিযোগ করছেন, মিয়ানমারের সেনা অভিযানে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে।এই প্রেক্ষাপটে ‘রোহিঙ্গা সেল’ গঠন করল বাংলাদেশ সরকার।
বিডিপ্রতিদিন/ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ ইমরান জাহান