রূপগঞ্জের ভয়াবহ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে শ্রমিকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদানে ৬টি দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ শোক জানান জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আবদুর রব এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার।
বিবৃতিতে বলা হয়, বার বার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুনে দুঃখজনক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় প্রমাণিত হচ্ছে যে দেশের কারখানাগুলো কোনক্রমে নিরাপদ নয় এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না। তৈরি পোশাক শিল্পে ক্রেতাদের চাপে কমপ্লায়েন্স ইস্যু নিশ্চিত করা হলেও দেশের অন্যান্য কারখানায় তদারকির বড় অভাব। কর্মক্ষেত্র নিরাপদ হওয়া এখন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এমনকি শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও কোথাও কোথাও তা বহাল রয়েছে। এ ধরনের বিপর্যয়ের আগে নিয়মিত তদারকি করলে অনেক মূল্যবান জীবন বেঁচে যেতে পারতো।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুনে ৫২ জনের মৃত্যু বিশ্বজুড়ে সমালোচিত ঘটনা। কারখানার ভবন নির্মাণে প্রচণ্ড অনিয়ম, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও নজর রাখছে, পোশাক শিল্পের বাইরে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটায় অন্যান্য শিল্প কারখানার দিকেও নজর দেয়ার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে।
সুতরাং, বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ রাখতে দেশের সব কারখানায় জরুরি তদারক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। নয়তো এসব ঘটনায় পোশাক শিল্পের উপরও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে যার পরিণতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।
কারখানাগুলো বিল্ডিং কোড মেনে নির্মিত হয়েছে কিনা এবং তা পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়ম কানুন অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা, অগ্নিদুর্ঘটনায় পড়লে জরুরি মুহূর্তে শ্রমিকরা নিরাপদে বের হওয়ার সুযোগ পান কিনা তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও কারখানা মালিকদের খতিয়ে দেখতে হবে।
শ্রমিকদের মূল্যবান জীবন সুরক্ষা, উৎপাদন ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
এ লক্ষ্যে
(১) সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে;
(২) ভবনের স্পেস, লোক সংখ্যা অনুপাতে নির্গমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করণসহ বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে 'জীবন বান্ধব' স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে;
(৩) আধুনিক বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা স্থাপন এবং নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে:
(৪) অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;
(৫) দেশের শিল্পকারখানা স্থাপন, পরিচালন যে এবং পরিদর্শনের সাথে সম্পৃক্ত সকল প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে।
(৬) শিল্প-কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত