জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতা কুক্ষিগতই নয়, চিরস্থায়ী করারও চেষ্টা করেছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আপনারা জানেন, শেখ হাসিনা স্বৈরাচারে পরিণত হয়েছিলেন। যদিও শেখ হাসিনা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তিনি স্বৈরাচারে পরিণত হয়েছিলেন। এক সময় তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগতই নয়, ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করেছিলেন। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যেই ২০১১ সালে তিনি সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেন।
তিনি বলেন, সংশোধনী বিষয়ে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি, একতরফাভাবে পাস হয়েছে। পাস হওয়ার পরে এটা নিয়ে তেমন একটা কথাবার্তাও হয়নি। আমিই প্রথম বলি, এর গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। এমনকি আইনগত বৈধতাও ছিল না। জনগণের মতামত নেওয়া হয়নি, সংবিধান জনগণের মতামতের প্রতিফলন। এছাড়া, যে বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছিল, তাদের মতামতকেও উপেক্ষা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সর্বোপরি যে একটা ১৫ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠিত হয়েছিল, তার ১২ জনই ছিল সরকার দলীয়। তারা সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার রেখেই সংবিধান সংশোধন। এসব উপেক্ষা করে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হয়, যার মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার একটা ব্যবস্থা করা হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বলেন, আমি অনেকবার বলেছি, শুধু পঞ্চদশ সংশোধনী এটা শুধু অসাংবিধানিকই নয়, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়েছে, সেই সরকারও অবৈধ। সুতরাং শেখ হাসিনার সরকার অবৈধ ছিল, এটা আমিই প্রথম উপস্থাপন করি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে চলতি মাসে দেওয়া আদালতের রায় নিয়ে তিনি বলেন, এ রায় গণতন্ত্রের প্রাথমিক বিজয়। যদিও রায়ে কিছু বিষয়ে অসংগতি রয়েছে। সে বিষয়ে চলতি মাসেই আপিল করব। আশা করি, এর মাধ্যমে চূড়ান্ত সমাধান হবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ