শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সৌদি আরবের ত্বিন ফল এখন নওগাঁয়

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

সৌদি আরবের ত্বিন ফল এখন নওগাঁয়

পবিত্র কোরআনে আত ত্বিন সুরায় বর্ণিত মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বিন শোভা পাচ্ছে নওগাঁর পত্নীতলায়। পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার তালহা এগ্রোফার্ম নামের একটি ফার্মে সাতটি ত্বিনগাছ চাষ করা হচ্ছে। রসে ভরপুর, মিষ্টি ও সুস্বাদু আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। গাছের প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় ত্বিন ফল জন্মে থাকে। ত্বিন একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ সুস্বাদু ফল; যা মরু অঞ্চলে ভালো জন্মে। এখন বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে ত্বিন।

তালহা এগ্রোফার্মের প্রতিষ্ঠাতা জাকির হোসেন মিলন বলেন, তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে গাজীপুর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চাষের জন্য ত্বিন গাছের চারা নিয়ে আসেন। ত্বিন ফলের চারা আনার সময় এটির ফলন হবে কি না সেটি নিয়েও সংশয়ে ছিলেন জাকির হোসেন। এরপর নিজস্ব তালহা এগ্রোফার্মে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় রেখে চারা রোপণ করেন। মাত্র তিন মাসে গাছে ফল আসতে শুরু করে। পরে ছয় মাসের ব্যবধানে একটি করে ফল পাকতে শুরু করেছে। এখন তার মুখে স্বস্তির হাসি। বর্তমানে বাজারে ফলটির চাহিদা অনেক। দামও ভালো। প্রতি কেজি ফল বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। পাকলে লাল ও হলুদাভ রং ধারণ করে এ ফলটি। আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এ ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তিনি আরও বলেন, এক বছরের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে আরও এক বিঘা জমিতে ত্বিন ফল চাষ করবেন। বাগান সম্প্রসারণ করতে গাছে কলম করতে শুরু করবেন। কলমগুলো করে বাগান সম্প্রসারণের পাশাপশি সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করার কথা ভাবছেন। ত্বিন ফল ছাড়াও বাগানে রয়েছে কয়েক প্রজাতির আম, পেঁপে, কাঁঠাল, আপেল, এলাচ, মাল্টাসহ বিদেশি অনেক ফলগাছ। ত্বিন ফলের বাগান ও চাষপদ্ধতি জানতে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের চাষি, সাধারণ মানুষ বাগানটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। পরিদর্শনে আসা বিভিন্ন চাষি ও সাধারণ মানুষ ত্বিন ফলের চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

উপজেলার নজিপুর থেকে ত্বিন বাগান দেখতে আসা সোহাগ হোসেন বলেন, তিনি ত্বিন বাগান দেখে অভিভূত হয়েছেন। নিজে প্রাথমিকভাবে ২০ শতক জমিতে ত্বিন বাগান করবেন বলে ঠিক করেছেন। পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, আরবের ডুমুর বাংলাদেশের মানুষের কাছে নতুন। পরীক্ষামূলকভাবে ত্বিন ফলের প্রজেক্টটির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে এখনো ত্বিন ফল চাষ কোথাও হয়নি। প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি সব সময়। এই ফলে তেমন কোনো রোগবালাই নেই বললেই চলে। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে। ভালো ফলাফল পেলে পরবর্তীতে বিস্তর গবেষণা করা হবে।

সর্বশেষ খবর