দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টেই জয় চেয়েছিলেন কোচ ফিল সিমন্স। সে আশা পূরণ হয়নি। বাজেভাবে হেরে গেছে টাইগাররা। সামনে এবার চট্টগ্রাম টেস্ট। কী অপেক্ষা করছে সেখানে? ভিন্ন মাঠ, ভিন্ন উইকেট। দলেও কিছুটা পরিবর্তন আছে। এসব কি নাজমুল বাহিনীকে কিছুটা সুবিধা দিবে?
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অনেক স্মরণীয় ম্যাচ আছে। যেগুলো প্রেরণা জোগাতে পারে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুটি টেস্ট জয় করেছে বাংলাদেশ। ড্র করেছে ৭টি। ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোকে এ মাঠেই রুখে দিয়েছেন টাইগাররা। প্রোটিয়াদের সঙ্গে চট্টগ্রামের সাগরিকায় বাংলাদেশ দুটি টেস্ট খেলেছে এর আগে। এর মধ্যে একটিতে হেরেছে। একটিতে ড্র করেছে। ২০০৮ সালে প্রথমবার এখানে মুখোমুখি হয় দুই দল। সেবার ইনিংস ও ২০৫ রানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ২০১৫ সালে ফের চট্টগ্রামে টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ড্র করে দুই দল। অবশ্য সেই টেস্টে বৃষ্টির হানাই ছিল বেশি। না হলে বাংলাদেশই এগিয়ে ছিল ম্যাচে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করে ২৪৮ রান। জবাবে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে করে ৩২৬ রান। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে ৬১ রান করে বিনা উইকেটে। বাকি খেলা আর মাঠেই গড়ায়নি। মুস্তাফিজুর রহমান সেবার ৪ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন।
সেই চট্টগ্রামে আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারও ভালো ক্রিকেট খেলে ভালো ফলের আশা বাংলাদেশ দলের। নাঈম হাসান গতকাল দৃঢ়তার সঙ্গেই বললেন, ‘আমার মনে হয়, এখানে আমরা ভালো একটা ফল করব।’ সেই ভালো ফলটা কী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়! সর্বোচ্চ তাই হতে পারে। মিরপুর টেস্টে যাই হোক, চট্টগ্রামে ভালো ফল করতে চায় টাইগাররা। নাঈম হাসানের ভালো রেকর্ড আছে চট্টগ্রামে। ২০১৮ সালে অভিষেকেই এ মাঠে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে)। এরপর ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখানে ৬ উইকেট শিকার করার কৃতিত্বও আছে নাঈমের। এবারেও কী দারুণ কিছু করে দেখাতে পারবেন তিনি! তেমনটাই আশা করেন নাঈম। তিনি বলেন, ‘মিরপুরের চেয়ে এখানে ভিন্ন রকমের উইকেট। আমাদের স্পিনাররা এখানে ভালো করবে আশা করি।’ তবে দলীয় পারফরম্যান্সই দলকে ভালো ফল উপহার দিতে পারে বলে মনে করেন নাঈম। তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সবদিক দিয়েই ভালো করতে হবে। আমাদের সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। নিজেদের প্রস্তুত করছে। আশা করি ভালো করব।’
মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের স্পিনাররা ভালো করেছে। পেসাররাও খারাপ করেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা পেস আক্রমণেই বাজিমাত করেছে। কাগিসো রাবাদা দুই ইনিংস মিলে শিকার করেন ৯ উইকেট। তাইজুল ইসলাম দুই ইনিংসে শিকার করেন ৮ উইকেট। প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ দুই ইনিংসেই শিকার করেন ৩টি করে উইকেট। বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদের শিকার ছিল ৩ উইকেট। চট্টগ্রামে সাধারণত স্পিনাররা সুবিধা পান। তবে এবার কেমন উইকেট হবে বলা কঠিন। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ শেষ টেস্ট খেলেছে গত মার্চ-এপ্রিলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই টেস্টে ১৯২ রানে হেরেছে টাইগাররা। এর আগে ২০২২ সালে খেলেছে ভারতের বিপক্ষে। সেই টেস্টেও পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে তারা। এবার ভালো ফল করার দৃঢ়তা নিয়েই মাঠের লড়াইয়ে নামবে নাজমুল বাহিনী।