আফগানিস্তান সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন। আর বাংলাদেশ গ্রুপ ম্যাচ খেলেই বিদায় নেওয়ায় ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তার মন্তব্য ছিল- আমাদের ফুটবলারদের পায়ের বুট খুলে হাতে চুড়ি পরানো উচিত। গতকালের পর এ কর্মকর্তা কি বলবেন- ব্যাট-বল ফেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হাতে কী দেওয়া উচিত? সত্যিই এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে ৩২ রানে হারের পর পুরো দেশই ক্ষুব্ধ। এতটা ক্ষুব্ধ যে কেউ আর ক্রিকেটারদের টাইগার বলতে আগ্রহী নন। প্রশ্ন উঠতে পারে, হার-জিত নিয়েই তো খেলা। এক খেলা হারলে এত ভেঙে পড়লে চলবে কি? শ্রীলঙ্কার কাছে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ একটা ম্যাচও জিততে পারেনি। ফলাফলটা ক্রীড়ামোদীরা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন। কেননা মুশফিকদের হোয়াইটওয়াশ করার ক্ষমতা লঙ্কানদের রয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানের কাছে এমন লজ্জাকর হার কি মানা যায়?
মানা যায় না বলেই কাল ম্যাচ শেষে মুশফিকদের তিরস্কার করা হয়েছে। ভারত বা পাকিস্তান দুর্বল প্রতিপক্ষের কাছে হারলে ক্রিকেটারদের বাসায় হামলা চালানো হয়। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের কাছে হারার পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের বাসায় কড়া নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। ম্যাচ হারলে ক্রিকেটারদের ওপর হামলা কারও কাম্য নয়। কিন্তু ভরাডুবি যখন সীমানা ছাড়িয়ে যায় তখন খেলাপাগল দর্শকরা নিজেদের আর ঠিক রাখতে পারেন না। নিউজিল্যান্ডকে দুবার হোয়াইটওয়াশ ও অন্য খেলায়ও জয় পেলে ক্রিকেটাররা প্রশংসায় ভেসে যান। কিন্তু কাল বাংলাদেশ যেভাবে হারল তাতে যদি ভারত ও পাকিস্তানের পরিণতি হতো তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেটকে ভালোবাসে ঠিকই। কিন্তু ভারতীয়দের মতো উš§াদনা নেই। থাকলে আফগানিস্তানের কাছে হারার পর যতই নিরাপত্তা থাকুক না কেন মাঠে যে কী ঘটত বলা মুশকিল ছিল। এদিক দিয়ে ভাগ্যবানই বলতে হয় মুশফিকদের। এ হারের অজুহাত হিসেবে অনেকে দাঁড় করাচ্ছেন তিন তারকা সাকিব, তামিম ও মাশরাফির অনুপস্থিতি। না, এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। সাকিব ও তামিমের দেখা না মিললেও প্রথম ম্যাচে মুশফিকদের সেঞ্চুরিসহ ভারতকে কি বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়নি। যদিও জিততে পারেনি তবুও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। ভালো খেললে উচ্ছ্বাস, হারলে তিরস্কার হবেই কিন্তু আফগানিস্তানের কাছে হারের পর তিরস্কারের ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না ক্রিকেটপ্রেমীরা। এটা ঠিক, আফগানরা ফুটবলের মতো ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে। তা না হলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল কীভাবে? তার পরও মাশরাফি, সাকিব, তামিম নেই বলে বাংলাদেশ হেরেই যাবে তা কেউ ভাবতেই পারেনি। এমন হারে প্রশ্ন উঠেছেÑ বাংলাদেশ কি হারছে না ইচ্ছা করে হেরে যাচ্ছে? বিসিবি বা ক্রিকেটাররা যতই অস্বীকার করুক না কেন, দলের ভেতর চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের দ্বন্দ্ব নাকি মহামারী রূপ ধারণ করেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ খেলার সময় তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাহলে কি গতকাল আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ ইচ্ছা করেই হেরেছে। ধরে নিলাম ইচ্ছা করে কেউ দেশের ইমেজ নষ্ট করতে চান না। কিন্তু কাল তাদের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল, মাঠে তারা ততটা মনোযোগী ছিলেন না। প্রথমেই ধরা যাক আফগানিস্তানের ব্যাটিং প্রসঙ্গ। শুরু থেকেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দুর্দান্ত খেলছিলেন। ৯০ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর একসময় মনে হচ্ছিল আফগানরা ১৫০ রানই করতে পারবেন না। অথচ ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে স্ট্যানিকজাই ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ম্যাজিক প্রদর্শন করেন। ৯০ থেকে তারা রান নিয়ে যান ২৫৪-তে। অর্থাৎ ১৬৪ রান করে তারা ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এশিয়া কাপে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেন। তাদের এ নৈপুণ্য নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু তারা কি উঁচুমানের ব্যাটসম্যান, তাদের আউটই করা যাবে না! এ সময় বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে মুশফিকদের আয়েশিভাব লক্ষ্য করা যায়। আর এতেই যেখানে ২০০ হওয়ার কথা নয় সেখানে রান ওঠে ২৫৪! তিন তারকা না থাকলেও ফতুল্লায় ব্যাটিং-উপযোগী পিচে ২৫৫ করাটা টাইগারদের জন্য কোনো কষ্টকরই ছিল না। আর দু-তিন জন ছাড়া আফগান বোলিংলাইনও ততটা শক্তিশালী নয়। বুঝেশুনে খেললে অনায়াসে জয় পাওয়া যেত। কিন্তু আনাড়ি মার্কা ব্যাট চালিয়ে বাংলাদেশ ২২২ রানে অলঅউট হয়ে যায়। সত্যি বলতে কী, মুমিনুল ও জিয়া ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানকে ততটা সতর্ক মনে হয়নি। এমন হারের পর কর্মকর্তারা কী ব্যাখ্যা দেবেন জানি না। বলবেন, এমন হতেই পারে। সব ঠিক হয়ে যাবে। তারা হয়তো স্বস্তিতে থাকবেন। কিন্তু কালকের হারে মন ভেঙে গেছে সবারই। এশিয়া কাপে না হয় বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপে নিজেদের দেশে মুশফিকদের দর্শক হয়ে বসে থাকতে হয় কি না সে শঙ্কাই জেগেছে। কেননা চূড়ান্ত পর্বে আসতে হলে আফগানিস্তানকে হারাতে হবে। গতকালকের হারের পর আশা কি করা যায় বাংলাদেশ পরবর্তীতে ঠিকই আফগানদের হারাবে।
শিরোনাম
- চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
- রায় মেনে ভারতকে সিন্ধু পানি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাল পাকিস্তান
- ভোটকেন্দ্র নীতিমালার গেজেট প্রকাশ, ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ
- গাজা যুদ্ধে সেনা হতাহতের সংখ্যা জানাল ইসরায়েল
- সাজা মওকুফ হওয়ায় মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১৩ আসামি
- মঙ্গলবার থেকে আমদানি-রফতানির সব সনদ অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক
- ‘জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে দ্রুত সময়ে নির্বাচনের ঘোষণা সরকার’
- এবার নিউইয়র্কের তহবিল বন্ধের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মমতা’ প্রকল্প বন্ধের খবরে দুশ্চিন্তায় চরাঞ্চলের প্রসূতিরা
- ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
- বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা
- আমেরিকায় যেভাবে ভয়ানক আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘লাফিং গ্যাস’
- দল নিবন্ধন : আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে ইসির ৭ কর্মকর্তা
- বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মতবিনিময় সভা
- ডিএসসিসির ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকা বাজেটের অনুমোদন
- রিকশা চালিয়ে বিদায়ী শুভেচ্ছা জার্মান রাষ্ট্রদূতের
- কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার, হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- স্ত্রীসহ সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামানের জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- দ্বিতীয় কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে কমেছে লেনদেন
টি-২০ বিশ্বকাপে দর্শক হওয়ার শঙ্কা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

গাইবান্ধায় পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মধ্য দিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘের যাত্রা শুরু
৫০ মিনিট আগে | বসুন্ধরা শুভসংঘ

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মমতা’ প্রকল্প বন্ধের খবরে দুশ্চিন্তায় চরাঞ্চলের প্রসূতিরা
৫৮ মিনিট আগে | দেশগ্রাম