ঢাকায় ফিরে একবারও মিডিয়ার মুখোমুখি হননি শেন জার্গেনসেন। অথচ মিডিয়াও ছাড়তে রাজি নয় তাকে। যে কোনো উপায়েই তার একটা মন্তব্য চাই, চাই-ই। কিন্তু অপরাগ তিনি। তারপরও প্রায় প্রতিদিনই তার গুলশানস্থ বাসভবনের সামনে হাজির হন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার লোকজন। কাল বাসার সামনে মিডিয়ার লোকজন দেখে মেসেজ পাঠান বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খানকে। মেসেজ পাঠিয়ে তার বর্তমান অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। গত ২৮ এপ্রিল হঠাৎ করে জাতীয় দলের হেড কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরই অস্থির হয়ে উঠে ক্রিকেট পাড়া। তবে আজ হয়তো ভবিষ্যৎ চূড়ান্ত হয়ে যাবে জার্গেনসেনের। আজ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভা। সভার আগে কোচের সঙ্গে বসবেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুই পক্ষের আলোচনার পর বুঝা যাবে, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত জার্গেনসেন থাকবেন, না নতুন কোচ পাবেন মুশফিকুর রহিমরা। বাতাসে গুঞ্জন অন্তর্বর্তীকালীন কোচের সন্ধানেই রয়েছে বিসিবি। এক্ষেত্রে দেশি কোচদেরই প্রাধান্য থাকবে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবির এক পরিচালক।
২০১২ সালে স্টুয়ার্ট ল হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দেন। ল'র বিদায়ে বিপাকে পড়ে যায় ক্রিকেট বোর্ড এবং অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েন মুশফিকরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে বোলিং কোচ জার্গেনসেনকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই বাজিমাত করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে হারান ৩-২ ব্যবধানে। দলের সাফল্যে খুশি বিসিবি জার্গেনসেনকে হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। হেড কোচ হয়ে তিনি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুটি টেস্ট ড্র, ওয়ানডে সিরিজ ড্র, নিউজিল্যান্ডকে ওয়ানডে সিরিজ হারান। তাই ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত চার মাসে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগাররা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতার দায়ভার পড়ে তার উপর। দলের ব্যর্থতার জন্য অনেক পরিচালক তাকে না রাখার বিষয়েও ইঙ্গিত দেন। পরিচালকদের ইঙ্গিতে চাকরির নিরাপত্তার অভাব বোধ করেই হয়তো হঠাৎ সরে দাঁড়ান জার্গেনসেন। অবশ্য এটাও লিখেন পদত্যাগপত্রে, বিসিবি চাইলে তিনি ভারত সিরিজে কোচের দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত।
তার হঠাৎ সরে দাঁড়ানোয় অপ্রস্তুত বিসিবি এখন একজন অন্তর্বর্তীকালীন কোচের সন্ধানে নেমে পড়েছে। এরমধ্যে বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, বিসিবি চাইলে তিনি হেড কোচের দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত। অবশ্য আরও কয়েকজনের নাম ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট কোচ সারওয়ার ইমরান, আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তবে বিদেশি কাউকে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এ প্রসঙ্গে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারমান আকরাম বলেন, 'কাল (আজ) বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কোচের আলাপের পর পরিষ্কার হবে সবকিছু।'