এক বঙ্গসন্তানের হাত ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটের পালাবদলের শুরু হয়েছিল। নতুন পর্যায়ে আর এক পটপরিবর্তন হতে চলেছে আরও একজন বাংলার ছেলের হাত ধরেই। ধোনির ভারতের অজুত সাফল্যের ভিতরও উচ্চারিত হয়েছে সৌরভ গাঙ্গুলীর নাম। এবার ধোনিযুগের অবসানের ইঙ্গিত যখন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে, তখন পালাবদলে আসল কাজটি করলেন বিরাট কোহলি। চার দিনে ইডেন টেস্ট জিতে ভারত অধিনায়ক যখন ঋদ্ধিমানকে দেশের সেরা উইকেট কিপার হিসেবে দরাজ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, তখন যেন ধোনি-সভ্যতার অবসান প্রায় নিশ্চিত হয়ে উঠল।
বাঙালির কাছে ঋদ্ধিমান মানে এক চাপা লড়াই। এক চেপে রাখা অ্যাগ্রেসন। সৌরভের সঙ্গে তার ফারাক শুধু এখানে যে সৌরভীয় ঔদ্ধত্য ভারতীয় ক্রিকেটের সিগনেচার, যে ভিতের উপর দাঁড়িয়ে অধিনায়ক ধোনির মুকুটে জুড়েছে একের পর এক সাফল্যের পালক, সেই ঔদ্ধত্য ঋদ্ধিমানের বডি ল্যাঙ্গোয়েজে প্রকাশ পায় না। বরং এখানে যেন তার মিল পাওয়া যাবে দেশের আর এক সেরা অ্যাথলিট পি ভি সিন্ধুর সঙ্গে।
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস জানে, একসময় রাহুল দ্রাবিড় দল থেকে বাদ পড়তে চলছিলেন। কিপার–ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে দলে নিয়ে আসেন সৌরভই। পরবর্তীকালে সে জায়গাটি নেন ধোনি। সর্বকালের সেরা ফিনিশার হিসেবে ধোনির খ্যাতি চূড়ান্ত। হিমশীতল মাথার অধিনায়ক হিসেবে তার তুলনা তিনি নিজেই। কিন্তু এত সাফল্যের পিছনে কিপার ধোনি অনেকখানিই অনালোচিত থেকে গেছেন। রান আউট, স্টাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে তার ক্ষুরধার গতি কখনও সখনও কিপার ধোনিকে প্রচারের আলোয় এনেছে ঠিকই, কিন্তু যে আলোচনা তাঁর কিপিং নিয়ে হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি।
বাংলার দুয়ারে যখন উৎসবের আমেজ, তখন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহল থেকে বাঙালির জন্য যেন পুজোর উপহার নিয়ে এলেন ঋদ্ধিমানই। আসলে সৌরভের দাদাগিরি তার নিজস্ব হলেও, সৌরভ নিজেও তো চান, সেই ক্ষ্যাতি কেউ না কেউ বয়ে নিয়ে চলুন। তার পরেও পূর্বাঞ্চলীয় আবার কোনও ক্রিকেটার দলের পক্ষে ক্রুশিয়াল হয়ে উঠুন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৪ অক্টোবর, ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন