বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করার অপচেষ্টা ও শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলন প্রতিহতের সমাবেশ করার দায়ে মিরপুর কলেজের উপাধ্যক্ষ এইচএম মাহবুবুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরে তারা এই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
৮ আগস্ট থেকে উপাধ্যক্ষের অব্যাহতির এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা এই উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রহত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মিরপুর মডেল থানায় গত ১৫ আগস্ট সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রদের এই আন্দোলন প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে কলেজের পক্ষ থেকে নোটিশ জারি করেছিলেন এই উপাধ্যক্ষ।
ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মিরপুর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও বিরোধিতাকারী, ছাত্র হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগী উপাধ্যক্ষ মাহবুবর রহমান কলেজ থেকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের (চলতি দায়িত্ব) থেকে গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন এইচএম মাহবুবুর রহমান। এখন তার উপাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে।
মিরপুর কলেজের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান জুয়েল বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্যাতনকারী উপাধ্যক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের এখনো বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। কলেজ খুলে দেওয়ার পর আমরা ছাত্র সংসদ থেকে চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার করেছি, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও বিরোধিতাকারী, ছাত্র হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগী উপাধ্যক্ষ মাহবুবর রহমান কলেজ থেকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
মিরপুর কলেজের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই কলেজের শত শত শিক্ষার্থী কলেজের আশেপাশে ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে অংশগ্রহণ করেছিলাম। গত ১৮ জুলাই দেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির পর থেকে পুরো আন্দোলনজুড়ে মিরপুর কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য বশির আহমেদ ও ক্রীড়া শিক্ষক মিঠুন মন্ডলের পরামর্শে কলেজ ছাত্রলীগের সালমান ও তরিকুলের নেতৃত্বে অনেক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করে। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন এইচএম মাহবুবুর রহমান।
ছাত্র আন্দোলন প্রতিহতের অভিযোগ প্রসঙ্গে ও তার পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন সম্পর্কে জানতে একাধিকবার উপাধ্যক্ষ এইচএম মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।