সংবাদটি শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেছি! দেশের সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ ছয়টি সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেডের অফিসে হামলা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। গত ১৯ আগস্ট দুপুরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা কার্যালয় ভবনের কাচের দেয়াল, সামনে রাখা ২০-২৫টি গাড়ি এবং কম্পিউটার ভাঙচুর করে। খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা সংখ্যায় ১০০-এর মতো ছিল। তারা লাঠিসোঁটা, লোহার রড ও হকিস্টিক নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীদের পরিচয় এবং কারণ জানা যায়নি। তবে অনেকের ধারণা, এই মিডিয়া হাউসটি কোনো একটি মহলের কোপানলে পড়ে থাকবে। অথবা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিশেষ কোনো মহল শত্রুতা উদ্ধার করে থাকতে পারে। ঘটনার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিডিয়া হাউসটি পরিদর্শন করে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী জড়িত নয়। খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীদের বেশভূষা দেখে কাউকে শিক্ষার্থী মনে হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনের বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোনো মহল বিশেষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোও ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পরদিন ক্ষতিগ্রস্ত ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেড কার্যালয় পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা তীব্র ভাষায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে মিডিয়া হাউসটির সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিসের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করেছেন। এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। এক বিবৃতিতে প্রেস উইং বলেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করেনি। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই মিডিয়া হাউসে সন্ত্রাসী হামলার খবর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও গুরুত্ব পেয়েছে।
একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের কবল থেকে ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুক্ত গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার শুরুতেই গণমাধ্যম কার্যালয়ে এ হামলা শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের শুভযাত্রাকে বিঘিœত করার অপচেষ্টাও বটে। সরকার পরিষ্কার বলে দিয়েছে, তারা গণমাধ্যমের পরিপূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এ অবস্থায় কারা এমন হামলা চালাতে পারে, সেটা একটি বিরাট প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর সরকারকেই তদন্ত করে বের করতে হবে। তবে আন্দোলন-উত্তর কিছু কিছু মহলের কথাবার্তা নানা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। কেননা, একটি সফল আন্দোলনের পর সে আন্দোলনের অর্জনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে। যাতে মানুষের মনে আন্দোলন এবং এর নেতৃত্ব সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। এ তৎপরতাকে বলা হয় প্রতিবিপ্লবী তৎপরতা। একটি সফল বিপ্লবের পর সে বিপ্লব সম্পর্কে মানুষের মনে হতাশা তৈরি করার একটি সূক্ষ্ম চক্রান্ত অনেক সময় কাজ করে। পাশাপাশি একশ্রেণির অতিবিপ্লবীর কর্মকান্ডও জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করে বিপ্লবের অর্জনকে ধূলিসাৎ করে দিতে পারে। ১৯৭১ সালে আমাদের দেশে তাই ঘটেছিল। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার পর বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সদ্য-স্বাধীন দেশে তখন আইনশৃঙ্খলা বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। থানা-পুলিশ ছিল বিশৃঙ্খল অবস্থায়। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা ছিল একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন। যদিও ঢাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ছিল ভারতীয় বাহিনীর ওপর। এ অবস্থার সুযোগ নিয়েছিল একদল দুর্বৃত্ত। তারা হঠাৎ কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র ঝুলিয়ে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেতাই কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। এরা অবাঙালিদের বাড়িঘর লুণ্ঠন, জমি-জিরাত, দোকানপাট দখলসহ নানা সন্ত্রাসী তৎপরতার মাধ্যমে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে। সে অরাজক পরিস্থিতির কিছুটা বিবরণ পাওয়া যায় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরীর (অব.) লেখা ‘এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য; স্বাধীনতার প্রথম দশক’ গ্রন্থে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন মেজর। তিনি প্রায় ৮০০ সৈন্যের বাহিনী নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করেন ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে। তারা অবস্থান নেন ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম)। তিনি লিখেছেন, ‘সকালেই স্টেডিয়াম থেকে দেখতে পাই শহরে প্রচুর লোকসমাগম। তাদের অনেকেই অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং গাড়ি করে ও পায়ে হেঁটে শহরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের দেখে মনে হয়নি গত ৯ মাসে কখনো তারা বৃষ্টিতে ভিজেছে বা রোদে ঘেমেছে। তাদের বেশভূষা, চালচলন ও আচরণে যুদ্ধের কোনো ছাপ ছিল না। দুপুর বেলায় জিন্নাহ এভিনিউতে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) লুটপাট আরম্ভ হয়। আমি এবং আমার অধীনস্থ সব সৈনিক স্টেডিয়ামে থেকেই তা প্রত্যক্ষ করলাম। কিন্তু এ সময় আমাদের করণীয় কিছুই ছিল না। কারণ ঢাকা শহরের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বের ভার অর্পিত ছিল ভারতীয় বাহিনীর হাতে। পরে জানতে পারি নিউমার্কেট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়ও ওইদিন লুটতরাজ হয়। এ লুটতরাজের জন্য অন্যদের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীকেও দোষারোপ করা হয়। তবে আমাদের প্রত্যক্ষ উপস্থিতির ফলে ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকায় কোনো প্রকার লুটতরাজ হয়নি।’ (পৃষ্ঠা; ১৭-১৮)।
মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী একদিনের লুটতরাজের বর্ণনা দিলেও এ ধরনের লুটতরাজ চলেছিল মাসাধিক কালজুড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, একশ্রেণির যুবক কাঁধে স্টেনগান ফেলে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিহারি বা উর্দুভাষী অবাঙালিদের বাড়িঘর, ব্যবসায়প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালাতে থাকে। পুরান ঢাকার নয়াবাজার, ইসলামপুর, বাবুবাজার, বাদামতলী এলাকায় অবাঙালি ব্যবসায়ীদের দোকান-গোডাউন লুট করে ওইসব যুবক। কেউ কেউ পরিত্যক্ত দোকান-গোডাউন ও বাড়ি দখলে নিয়ে নেয়। এরা আসলে মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের পর এরা মুক্তিযোদ্ধা সেজেছিল। তাই লোকজন এদের বলত ‘সিক্সটিন্থ ডিভিশন’ বা ‘ষোড়শ বাহিনী’র মুক্তিযোদ্ধা। পরবর্তী সময়ে এদের অনেকেই যেনতেন প্রকারে একটি সনদ জোগাড় করে মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হয়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কতিপয় মন্ত্রী ও সরকারের বাইরের একটি প্রভাবশালী গ্রুপের সহায়তায় তারা দোর্দন্ড প্রতাপে বিচরণ করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ), যা ‘মুজিব বাহিনী’ নামে পরিচিত ছিল, তারা এই সিক্সটিন্থ ডিভিশনকে মদত দিত; যার নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগনে মরহুম শেখ ফজলুল হক মণি। এই মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে হত্যার ষড়যন্ত্র পর্যন্ত করেছিল। এ সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধকালে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বিশেষ সহকারী মঈদুল হাসানের ‘মূলধারা-৭১’ গ্রন্থে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।
প্রসঙ্গটি উল্লেখ করলাম এজন্য যে, বিপ্লব-উত্তর সময়ে একটি দেশে অনেক সময় এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। বিপ্লব-উত্তর ক্ষমতাসীন সরকার এবং সেই বিপ্লবের উদ্যোক্তা ও নেতৃত্বদানকারীরা যদি তা কঠোর হাতে দমন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে গোটা সমাজ পরিণত হতে পারে সন্ত্রাসের রাজত্বে। যেমনটি হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এর পরে। গত ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানকে একটি সফল বিপ্লব বলে অভিহিত করা মোটেও অযৌক্তিক হবে না। কারণ, গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী একটি সরকারের পতন ঘটাতে দেশের তাবৎ মানুষ এক হয়ে নেমেছিল; যা রূপ নিয়েছিল একটি সফল বিপ্লবের। আর তার মধ্য দিয়ে অবসান ঘটেছে দেড় দশকের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার। মানুষ যখন স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে, তখনই কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা তাদের মনে নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু লোক বিশেষ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে চলেছে। তাদের অভিযোগ এসব গণমাধ্যম গত সরকারের তাঁবেদারি করেছে এবং ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দৃষ্টিকটুভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের তোষণে লিপ্ত ছিল। বিশেষ করে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বছরটির নামে টেলিভিশন চ্যানেলটি এক্ষেত্রে ন্যক্কারজনক ভূমিকায় নেমেছিল। তারা সরকারের স্তুতির পাশাপাশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চরিত্র হননের জন্য নানারকম গল্প প্রচার করেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে তারা নেতিবাচক বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করেছে; যাতে এই বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছিল। এসব কারণে টিভি চ্যানেলটি আন্দোলনের শেষ দিনে শেখ হাসিনার পলায়নের পর গণবিক্ষোভের মুখে পড়েছিল। একই রকম কারণে আরও কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল জনতার রোষের শিকার হয়েছে। অবশ্য কয়েকদিন পরেই টিভি চ্যানেলগুলো অনুষ্ঠান সম্প্রচারে এসেছে। শুধু মালিকানা নিয়ে মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় ‘সময়’ টেলিভিশনের সম্প্রচার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ- নির্বাহী বিভাগ, পার্লামেন্ট ও আইন বিভাগের পরেই গণমাধ্যমের অবস্থান। আমাদের সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ৩৯ অনুচ্ছেদের (২) ধারায় বলা হয়েছে- ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং (খ) সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল।’ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী কোনো সরকার সংবিধানের এই অঙ্গীকার কখনোই ভঙ্গ করতে পারে না। তবে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব হলো, নিরপেক্ষ সংবাদ ও এর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা, যাতে জনগণ সত্যটা জানতে পারে। যদিও বেশির ভাগ গণমাধ্যম সে দায়িত্ব পালন করে না। তারা কখনো ভয়ে, কখনো লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশে ক্ষমতাসীন সরকারের অনুগত দাসে পরিণত হয়। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এমনটি দেখা গেছে।
একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আগমন। একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের নিষ্পেষণে একদিকে জনগণ কথা বলার অধিকার হারিয়েছিল, অন্যদিকে গণমাধ্যগুলো হারিয়েছিল তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। শ্বাসরুদ্ধকর একটি পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া জনগণের কাছে এই সরকারের প্রধান অঙ্গীকার, দেশে পূর্ণ অর্থবহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। এজন্য রাষ্ট্র সংস্কার কিংবা রাষ্ট্র মেরামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা করতে হলে এ সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। সরকারে যেতে উন্মুখ হয়ে ওঠা কোনো দলের প্ররোচনায় সংক্ষিপ্তভাবে কিংবা মেরামত অসম্পূর্ণ রেখে এই সরকারের চলে যাওয়া ঠিক হবে না। গত ২১ আগস্ট দেশের ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে সংস্কারে তাড়াহুড়া না করার আহ্বান জানিয়েছে। শুধু ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলই নয়, দেশের প্রতিটি মানুষ চায় রাষ্ট্র কাঠামোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অনিয়ম-দুর্নীতির আবর্জনা জমে আছে, তা পরিষ্কার করে বাংলাদেশকে একটি আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত করতে যতটা সময় লাগে এই সরকার ততটা সময় নিক। সেই সঙ্গে সরকারকে ‘সিক্সটিন্থ ডিভিশন’র তৎপরতা সম্পর্কেও সাবধান থাকতে হবে যাতে একটি সফল বিপ্লবের ফসল ইঁদুরে না খেয়ে ফেলে।
লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক