চালের দাম বাড়ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২ থেকে ৬ টাকা। দেশে চালের মজুদ যথেষ্ট। তারপরও কেন দাম বাড়ছে তা অবশ্যই ভাবনার বিষয়। একইভাবে দাম বেড়েছে ডিমের। ডিমের দাম ক্রেতাদের আয়ত্তের মধ্যে রাখতে সরকার ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। দেশে যে দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে তার অর্ধেক দামে ডিম এসেছে ভারত থেকে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ ডিম আমদানি সত্ত্বেও ক্রেতাদের জন্য তা কোনো সুসংবাদ বয়ে আনেনি। ডিমের দাম কমার বদলে বরং বেড়েছে। ৪০ দিন আগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন হয়। ৩৬ দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার পরও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বদলে কমতে শুরু করে। সে সময় ব্যবসায়ীদের ভাষ্য ছিল, পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় সবজিসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে। তারপর থেকে চাল-ডিমসহ আরও কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে কেন, তার সদুত্তর পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ছে। চাল ব্যবসায়ীদের অভিমত, বন্যা ত্রাণের চাল কেনার কারণে চালের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাবখানা এমন বন্যা না হলে মানুষ ভাত খেত না। পরবর্তীতে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করা হচ্ছে বৃষ্টিকে। ডিমের ক্ষেত্রে একেক সময় দেওয়া হচ্ছে একেক অজুহাত। অভিযোগ উঠেছে, পুরনো চাঁদাবাজদের স্থান পূরণ করেছে নতুন চাঁদাবাজরা। জুলাই বিপ্লবের পর যে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তা শুরু হয়েছে নতুন পরিচয়ে। অভিযোগ উঠেছে, মানুষের মনে জুলাই বিপ্লব এবং অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করতে পতিত সরকারের সুবিধাভোগীরা কারসাজি চালাচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যে কারণই থাক, সেদিকে সরকার চোখ ও কান খোলা রাখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। অযৌক্তিকভাবে কেউ দাম বাড়ালে মুনাফার লকলকে জিহ্বা সংবরণে সরকার পদক্ষেপ নেবে এটি আমজনতার দাবি। সরকারের পাশাপাশি জুলাই বিপ্লবের মূল নায়ক ছাত্র সমাজকেও এ বিষয়ে সক্রিয় থাকতে হবে। বিশ্ব ইতিহাসের অনন্য গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের অর্জন জিইয়ে রাখতে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা জরুরি।