বসতি স্থাপনের জন্য যথেচ্ছ পাহাড় কাটা ও বৃক্ষ নিধন চলছেই। ঝুঁকিপূর্ণ এসব পাহাড়ের কোলে বাস করা পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নেওয়ায় প্রায়ই ধসের ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। পাহাড় ধসে মৃত্যু যেন নৈমিত্তিক নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। টানা বৃষ্টি ও মৌসুমি বাতাসের প্রভাবে পাহাড়ের মাটির দৃঢ়তা নাজুক হয়ে শঙ্কা সৃষ্টি করে ধসের। তেমনই আবার হলো কক্সবাজারের উখিয়ায়। এক পরিবারের তিনজনসহ ছয়জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতের ধসে। একটি ঘটনার শোক হালকা হওয়ার আগেই ঘটছে আরেকটি ঘটনা। ঝরছে আরও কটি প্রাণ। যেন এর শেষ নেই। চলতি বর্ষা মৌসুমে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে দিনদিন। নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও বৃক্ষরাজি উজাড় করে অবকাঠামোগত প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট করায় পাহাড় আর তার স্বাভাবিক দৃঢ়তা নিয়ে দাঁড়াতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের অবৈধ হাউজিং-রিয়েল এস্টেটের নামে দখলের মচ্ছবে মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে পাহাড়ের। কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব। প্রশাসনের সঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর এবং পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটিকেও সমন্বিতভাবে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। পাহাড় ধসে মৃত্যু যেন মানুষের সৃষ্ট কারণে না হয়, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। দুর্যোগের আভাস দেখে শুধু মাইকে সতর্ক করা এবং দুর্ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থাতেই কর্তব্য সীমিত রাখলে এ দুর্ভাগ্য চিরকালই বহন করতে হবে হতদরিদ্র মানুষকে। এটা চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট সবার সত্যিকার সদিচ্ছা ও সক্রিয় পদক্ষেপে পাহাড় ধসে মর্মান্তিক মৃত্যুর এই মিছিল থামুক- প্রত্যাশা সবার।