কেমন আছেন, অভিনয়কে ঘিরে ব্যস্ততার কথা জানাবেন কি?
সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় ভালো আছি। প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় একটানা কাজ করছি। তবে এখন পরিমাণে কম। কারণ আগের মতো গল্প ও চরিত্র পাই না। বর্তমানে এ জে রানার একটি ও বাবুলের 'চিনি বিবি' চলচ্চিত্রে এবং ছোটপর্দার কয়েকটি নাটকে অভিনয় করছি। সবমিলিয়ে বেশ ভালোভাবেই ব্যস্ত সময় কেটে যাচ্ছে।
নতুন নির্মাতাদের কাছে সিনিয়র শিল্পীদের মূল্যায়ন কেমন?
ওরা তো সিনিয়রদের যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। তাই তো স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারছি। আসলে মূল্যায়ন দুই ধরনের। গল্প দিয়ে এবং সামনাসামনি। দুভাবেই তারা সিনিয়রদের মূল্যায়ন করছে। তাই আমার মতো অন্য সিনিয়ররাও ভালোভাবে কাজ করতে পারছেন। বিশেষ করে সাফি ও এ জে রানা খুবই মেধাবী এবং দক্ষ নির্মাতা। তারা সিনিয়রদের যথেষ্ট সম্মান দেয়।
বেশ কিছু কালজয়ী চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে এখনো আলেয়া, চন্দ্রমুখী, শুভদা কিংবা ময়না বু হয়ে আছেন, ভাবতে কেমন লাগে?
নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে হয়। না হলে এমন সব কালজয়ী চরিত্র পাব কেন। এগুলো আজীবন আমার মনে মধুর স্মৃতি হয়ে থাকবে। এর জন্য খান আতা, আমজাদ হোসেন, চাষী নজরুলসহ অনেকের কাছে আমি চিরঋণী হয়ে আছি। খান আতার নবাব সিরাজউদ্দৌলার আলেয়া, আমজাদ হোসেনের গোলাপী এখন ট্রেনের ময়না বু এবং ভাত দে'র চরিত্র, চাষী নজরুলের দেবদাস এ চন্দ্রমুখী এবং শুভদার নামভূমিকায় অভিনয় এখনো আমাকে চলচ্চিত্রে অমর করে রেখেছে। তাদের ঋণ কখনো শোধ করতে পারব না।
আপনাকে ঢালিউডের দাদিমা বলেও সম্বোধন করা হয়, এ বিষয়ে কিছু বলুন।
এ ব্যাপারটি আমার কাছেও উপভোগ্য। দাদিমা ডাক শুনতে খুব ভালো লাগে। এ চরিত্রটি আমার জন্য সৃষ্টি করেছিলেন প্রখ্যাত নির্মাতা প্রয়াত শিবলী সাদিক। তার 'অন্তরে অন্তরে' চলচ্চিত্রে আমি প্রথম দাদিমার চরিত্রে অভিনয় করি। দর্শক এই চরিত্রে আমাকে এতটাই পছন্দ করেছিল যে এর পর থেকে সবাই আমাকে দাদি চরিত্রেই কাস্ট করতে আগ্রহী হয়ে উঠে। এর পর এফ আই মানিকের 'দাদিমা' চলচ্চিত্রের নামভূমিকায় অভিনয় করে বর্তমান সময়ের দর্শকের কাছেও সত্যি সত্যি দাদিমা হয়ে গেছি। বর্তমানে দুটি চলচ্চিত্রেই দাদিমার চরিত্রে অভিনয় করছি। মনে হচ্ছে, দাদিমা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। দাদি হতে পেরে ভালোই লাগছে।
বাস্তব জীবনেও কি দাদিমা?
না, বাস্তব জীবনে আমি নানু। আমার একমাত্র মেয়ে মুক্তির পুত্র তারিমা ইসলাম দরদী কিন্তু নানুর বদলে আমাকে আম্মুই ডাকে। কেউ যদি তাকে বলে 'আম্মু নয়, উনি তোমার নানু' তাহলে সে চিৎকার করে কান্না জুড়ে দেয়। ওর কান্না দেখে আমিও চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। আসলে মুক্তি আমাকে আম্মু বলে ডাকে তো, তাই দরদীর কাছেও আমি আম্মু। আর তার মাকে মা বলেই ডাকে। বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই মজার। আসলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আমি খুব সুখী। আমার মা খুবই অসুস্থ ছিলেন। আমাদের জন্য আল্লাহতায়ালা তাকে সুস্থ করে তুলেছেন। সবাই আমার মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন।
* আলাউদ্দীন মাজিদ