জন্মগত ত্রুটি, পারিবারিক অবস্থান, দীর্ঘমেয়াদি রোগ, অপুষ্টি-এ কারণগুলো আবশ্যিকভাবে শিশুর সঠিক বৃদ্ধি, বিশেষ করে শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত করার জন্য দায়ী। পাশাপাশি মানসিক বিকাশের জন্য স্নায়ু রোগ ও মানসিক সমস্যা বিশেষ ক্ষেত্রে কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সর্বোপরি হরমোনজনিত সমস্যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক উভয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যা অনেক সময়ই গতানুগতিক চিকিৎসার বাইরে থেকে যায়। সার্বিক এই প্রেক্ষাপটই আমার এই আজকের বিষয় নিয়ে লিখতে প্রেরণা জুগিয়েছে।
গর্ভস্থ শিশুর প্রাথমিক বৃদ্ধির সময় থেকেই শুরু হয় হরমোনের প্রভাব। গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে কিছু হরমোন যেমন, Insulin I Insulin like Growth Factor-1 & 2 এবং পরবর্তীকালে GGlucocorticoid, Growth hormone ও Thyroid hormone শিশুর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। আর শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে পূর্ণাঙ্গ যুবক হওয়া পর্যন্ত পুরো সময়টার বৃদ্ধি মূলত নিয়ন্ত্রিত হয় Growth hormone, Thyroid hormone ও Insulin হরমোনের সমন্বিত কার্যক্রমের দ্বারা। এর সঙ্গে জন্মের পর প্রথম বছরের (infancy দ্রুত বৃদ্ধি ও বিকাশে পর্যাপ্ত পুষ্টির পাশাপাশি Insulin like Growth Factor-1 বেশি ভূমিকা রাখে এবং পরবর্তীকালে শিশু বয়স যখন ৯-১০ বছরের কাছাকাছি হয়, তখন বয়ঃসন্ধির puberty) সময় sex steroid (androgen and estrogen) দ্রুত বৃদ্ধি ঘটিয়ে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিষয়গুলো সর্বসাধারণের জন্য একটু জটিল মনে হলেও আশা করি আলোচনা থেকে আমরা সবাই বুঝতে পারলাম যে, শিশুর সার্বিক বৃদ্ধির প্রতিটি পর্যায়ে হরমোনের ভূমিকা কতটা প্রয়োজনীয়। তাই পরিমিত পুষ্টির জোগান ও সময়মতো অন্য রোগের চিকিৎসা যেমন শিশুর বৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি, তেমনি হরমোনের সমস্যা থাকলে তার নিরসন ছাড়া কোনো চেষ্টাই ফলদায়ক হতে পারে না।