ইউক্রেনের তিন সেনা সদস্য। তারা আত্মসমর্পণ করেছেন। সামনে রুশ সেনা সদস্যরা। ধুলায় ঢাকা রাস্তার ওপর পাশাপাশি হাঁটু গেড়ে বসেন ওই তিন সেনা। কিন্তু এ অবস্থার মধ্যেই তাদের নির্দয়ভাবে গুলি করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায় ওই অবস্থায় তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ড্রোন থেকে ধারণ করা একটি ভিডিওতে এমন চিত্রই ধরা পড়েছে।
ভিডিওটি সিএনএনের হাতে এসেছে। ঘটনাটি আগস্ট মাসের শেষের দিকে। পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক শহরে। যেখানে দুই দেশের সেনাদের লড়াই চলছে। এ ভিডিও দেখার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সিএনএনকে এমন ১৫টি ঘটনার তালিকা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সূত্রগুলো। বেশির ভাগ ঘটনাই ড্রোন থেকে ধারণ করা বা অডিও ক্লিপ থেকে পাওয়া। সূত্রগুলো বলছে, যুদ্ধের সম্মুখসারিতে আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সেনাদের বন্দি না করে হত্যা করছেন রুশ সেনারা। চলতি বছর এমন হত্যাকা বেড়েছে। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রি কস্তিন সিএনএনকে জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর পর তারা এ ধরনের ২৮টি ঘটনা তদন্ত করছে। এসব ঘটনায় মোট ৬২ জন ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। এমনই একটি ঘটনা পোকরোভস্কে ওই তিন সেনাকে হত্যা।
ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে বড় সাফল্য পেয়েছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। এতে একটা আশা দেখা দিয়েছিল যে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনাদের সরিয়ে নিজেদের সীমান্ত রক্ষায় মোতায়েন করবে মস্কো। তবে তেমন কিছু হয়নি। পোকরোভস্কে ইউক্রেনের যে কৌশলগত সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, তা দখলে এগিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। গত মে মাসে কিয়েভের আমন্ত্রণে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন বিচারবহির্ভূত হত্যাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার মরিস টিডবল-বিঞ্জ। দেশটিতে যুদ্ধক্ষেত্রে বিচারবহির্ভূত হত্যার যেসব খবর আসছে, সেগুলো নিরীক্ষা করতেই ছিল তার ওই সফর।
মানবতাবিরোধী অপরাধ : ইউক্রেনীয় শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। মস্কোর বিরুদ্ধে এখন গণহত্যার অভিযোগ আনতে জোরেশোরে তৎপরতা শুরু করেছে কিয়েভ। এ ক্ষেত্রে আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সেনাদের হত্যাকা কে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করছেন দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রে কস্তিন।