গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কারফিউ জারি করার। এমনকি আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত হয় ১৪ দলের বৈঠকে। তাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরই গুলি চালিয়ে গণহত্যা চালানো হয়। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ ১৪ দল মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। এতে আরও বলা হয়, সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের শরিক রাজনৈতিক দল- সাম্যবাদী দল, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, জাসদ (ইনু), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মেনন), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণআজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাসদ ও জাতীয় পার্টি-জেপির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ গঠন করে তদন্তপূর্বক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
শিক্ষার্থী হত্যার আরও এক অভিযোগ : অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গুলিতে দশম শ্রেণির ছাত্র আনাস হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
গতকাল অভিযোগ গ্রহণের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট গেন্ডারিয়ার বাসা থেকে গোপনে বেরিয়ে চানখাঁরপুলে আন্দোলনে যোগ দেয় দশম শ্রেণির ছাত্র আনাস। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে। আমরা কিছু ভিডিও পেয়েছি, কীভাবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সেখানে অলিতে-গলিতে ঢুকে গুলি করেছে। তিনি বলেন, আনাস বাসা থেকে গোপনে বের হওয়ার সময় তার স্কুলের খাতায় বাবা-মায়ের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে আসে। চিঠিতে সে বলে, ‘আমি যদি বেঁচে না ফিরি, তবে গর্বিত হইয়ো। জীবনে প্রতিটি ভুলের জন্য ক্ষমা চাই।’ এ ঘটনায় তার বাবা পলাশ সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন। ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ভারতে অবস্থান করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এ নিয়ে মোট ৩১টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হলো। এর মধ্যে ১৪টি চিফ প্রসিকিউটর বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো তদন্ত সংস্থায় দাখিল করা হয়।