খুলনার দুই সরকারি হাসপাতালকে (মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল) ঘিরে প্যাথলজি, ওষুধ ক্রয়, রোগীর পথ্য সরবরাহ, দালাল চক্র, ইউনিট ভিত্তিক ডিউটি বণ্টনসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকরাও জড়িয়ে পড়েছেন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে কমিশন বাণিজ্যে। জানা যায়, সরকারি হাসপাতালে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও কমিশনের বিনিময়ে সাধারণ রোগীদের ওই সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়। অধিক টাকার বিনিময়ে বাইরের ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের। সরেজমিনে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায়, বহির্বিভাগের সামনে মূল ফটকের আশপাশেই ফাঁদ পেতে রোগীর অপেক্ষায় থাকে দালালরা। সুযোগ বুঝে রোগী ফুসলিয়ে নিয়ে যায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এখানে ৮-১০ জন করে দালাল চক্রের আলাদা দল রয়েছে। যারা ‘দ্রুত ও ভালো মানের পরীক্ষার’ প্রলোভনে সাধারণ রোগীদের সর্বস্বান্ত করেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের সিন্ডিকেট আরও বড়। এখানে নারী-পুরুষ মিলে শতাধিক দালাল চক্র রয়েছে। ভুক্তভোগী রোগী আমেনা খাতুন জানান, পাইলস-এর সমস্যার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগে এলে টিকিট কাউন্টারে এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি ভিড়ের মধ্যে ভোগান্তি না করে সহজে ভালো ডাক্তার দেখানোর কথা বলে হাসপাতালের সামনে উদয়ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে সাড়ে ৩ হাজার টাকার টেস্ট করানোর পর ওষুধ দিলেও তিনি সুস্থ হয়নি। পরবর্তীতে আবার সরকারি হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখান।
মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর স্ত্রী রাহিলা বেগম জানান, তার স্বামী এক সপ্তাহ ধরে পেটের ব্যথায় ছটফট করছে।
হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট দিয়েছেন। যার মধ্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ সব পরীক্ষা দালালের মাধ্যমে বাইরের সুগন্ধা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করতে হয়েছে। অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার মনগড়া রিপোর্টও দিয়ে থাকে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল বলেন, গ্রামের মানুষকে টার্গেট করে চক্রটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে প্রতারণা করছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে দালাল চক্রের তৎপরতা বন্ধে অভিযান চালানো হবে।