বর্ণান্ধদের জন্য সাইফ উদ্দিনের যত আবিষ্কার

কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধদের জন্য একের পর এক আবিষ্কার করছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা এলাকার সাইফ উদ্দিন আহমেদ। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণাধর্মী কাজ করছেন। কালার ব্লাইন্ডদের জন্য প্রথমে গ্লাস এরপর স্কিন প্রটেক্টর, এবার লেন্স নিয়ে এসেছেন তিনি। যিনি কালার ব্লাইন্ড তিনি এই লেন্স পরে নির্দ্বিধায় স্বাভাবিকভাবে সব কাজ করতে পারবেন। সাইফ উদ্দিন আহমেদের বিশ্বাস, এই লেন্স বিশ্ব দরবারে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। ২০২২ সালে তিনি কালার ব্লাইন্ডদের জন্য একটি গ্লাস আবিষ্কার করেছিলেন। যার নাম দিয়েছিলেন ‘ভাইব্রেন্ট’। যে গ্লাসের তৈরি চশমা দিয়ে কালার ব্লাইন্ডরা পৃথিবী রঙিনভাবে দেখতে পারবেন। তারা শনাক্ত করতে পারবেন বিভিন্ন রং। দেশের পাশাপাশি দেশের বাহিরেও এ ধরনের গ্লাস ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে বিশেষ ধরনের স্ক্রিন প্রটেক্টর আবিষ্কার করেন। যে স্ক্রিন প্রটেক্টর মোবাইলে ব্যবহার করলে কালার ব্লাইন্ডদের জন্য অনেক কাজ সহজ হয়ে যাবে। এ ধরনের স্ক্রিন প্রটেক্টরের চাহিদা ইউরোপের দেশগুলোতে রয়েছে বলে জানান সাইফ আহমেদ। তিনি বলেন, কালার ব্লাইন্ড মানুষকে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সে সমস্যাগুলোর সমাধানের চেষ্টা করি। তারই অংশ হিসেবে এবার লেন্স নিয়ে এসেছি। কালার ব্লাইন্ড গ্লাস পরলে সহজেই বোঝা যায়। গ্লাস পরলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তবে আমার এই লেন্স পরলে কেউ আর বুঝতে পারবে না সে একজন কালার ব্লাইন্ড। সে সঙ্গে লেন্স পরেছে এটাও কেউ বুঝতে পারবে না। কারণ লেন্সেরও একটি আলাদা কালার রয়েছে। যার কারণে লেন্স পরলে বোঝা যায়। কিন্তু আমার লেন্স পরলে কেউ বুঝবে না। চোখের মণি সঙ্গে মিশে যাবে। লেন্সের সম্ভাবনা সম্পর্কে সাইফ বলেন, এই লেন্স বাংলাদেশের কোথাও পাওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের এই লেন্সের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেননি। যদিও বাংলাদেশের মানুষ কালার ব্লাইন্ডদের নিয়ে এত সচেতন নয়। তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কালার ব্লাইন্ড বিষয়টি নিয়ে অনেক সচেতন। তারা যদি জানতে পারে এ ধরনের লেন্স আছে তাহলে আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের একটা নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। সাইফের আবিষ্কার প্রসঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, তিনি কালার ব্লাইন্ডদের জন্য একের পর এক বিভিন্ন বিষয় আবিষ্কার করছেন। আমার জানামতে তার প্রত্যেকটা আবিষ্কারের দ্বারা কালার ব্লাইন্ডরা উপকৃত হয়েছেন। এখন তিনি লেন্স আবিষ্কার করেছেন। আশা করি এটাতেও তিনি সফল হবেন।