কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) এখন ‘তালা বিশ্ববিদ্যালয়’-এ পরিণত হয়েছে । সারা বছরই এটা সেটা নিয়ে মানববন্ধন আর তালা মারার ঘটনা ঘটছে। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থী আর কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা বিরক্ত।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফের পদত্যাগের দাবিতে ৪র্থ দিনের মত কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির একাংশ। বৃহস্পতিবারও উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা লাগানো ছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুল হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মান এক হওয়া উচিত নয়। ভিসির দুর্নীতির অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ও ইউজিসিতে দেয়া যায়। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তালা মারা হাস্যকর। যে হারে তালা লাগানো হচ্ছে কিছুদিন পর এর নাম হবে তালা বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু কম মানের শিক্ষক অন্যদের ফুসলিয়ে আন্দোলনের নামে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। এখানে ভিসির দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি কৌশল মাত্র।
আন্দোলনকারী কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের বলেন, "উপাচার্য নিয়োগে আত্মীয়করণের মাধ্যমে অনিয়মের নজির স্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণেও উপাচার্য দুর্নীতি করেছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। তিনি পদত্যাগ না করলে এ আন্দোলন চলবে।"
সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড.এ কে এম মাঈনুল হক মিয়াজী বলেন,"সমস্যা থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এ রকমের আন্দোলনের প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে।"
সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) কুমিল্লার সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন,"কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো। এখানে রাজনীতি চালু হওয়ায় অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র রাজনীতির সাথে শিক্ষক রাজনীতিও বন্ধ করতে হবে। এখানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে।"
এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আশরাফ বলেন, "তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে তারা তা ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পেশ করুক। এ সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে তারা আমাকে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করছে। যে কোনো ভিসির মেয়াদের শেষ সময়ে তাদের এই রকম আচরণ এখন ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
উল্লেখ্য, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার বিচার ও পদত্যাগের দাবিতে সোমবার মানববন্ধন শেষে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন শিক্ষক নেতারা।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর