‘একি লাবণ্যে, পূর্ণ প্রাণও, প্রাণে এসো হে, আনন্দ বসন্ত সমাগমে'। শীতের চাদর ফেলে বসন্তের আগমনে বৃক্ষরাজি যেমন পল্লবিত হয়ে পূর্ণতা পেতে থাকে, তেমনি মানব মনও নেচে ওঠে আনন্দে। কর্মব্যস্ততা ভুলে মেতে উঠতে চায় আনন্দ-হিল্লোলে। এই আনন্দের মুকুটে নতুন পালক যুক্ত করে বসন্তবরণ উৎসব।
দেশের সংস্কৃতির লীলাক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঘের শেষে ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে মেতে উঠেছিল ‘বসন্ত’ উৎসবে। দিনভর সুরের মূর্ছনা, নৃত্য-গীত আর কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে উৎসবের আয়োজন এগিয়ে যেতে থাকে।
সকালে চারুকলায় বকুলতলায় গিটারের মূর্ছনায় বসন্ত উৎসবের উদ্বোধনী পর্বের সূচনা হয়। ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ স্লোগানে বসন্ত উৎসব-১৪২৫ এর এ আয়োজন করে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। শাস্ত্রীয় সংগীতের মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। এর পর একে একে পরিবেশন করা হয় গান, আবৃত্তি এবং নৃত্য। সকাল থেকে বাসন্তী শাড়ি আর হলুদ পাঞ্জাবি পরিহিত তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়স আর পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে চারুকলা প্রাঙ্গণসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নানা ফুলের রঙে সেজেছিল তরুণ তরুণীরা। মুখে ছিল নানান রঙ্গের আলপনা।
চারুকলা ছাড়াও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও বটতলায় চলে বসন্তবরণের অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠানে বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে গান, আবৃত্তি এবং নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসরাত হাসনা বলেন, বর্ষবরণ, নবান্ন উৎসব, পৌষমেলা-এসবের মতো বসন্ত উৎসবও বাঙালি চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ সব উৎসবের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহনশীলতা। মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ়তর হয়।
জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানেজার চৌধুরী সুইট বলেন, বাঙালির হাজার বছরের যে সংস্কৃতি রয়েছে সেই সংস্কৃতি যেন আমরা সবাই মিলে পালন করি।
শুধু রাজধানীতে নয়, দেশজুড়ে বসন্তের আবাহনে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠান। প্রকৃতি আর মানুষের এই মিলনমেলা গোটা দেশকে মাতিয়ে তোলে আনন্দ হিল্লোলে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা