ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট- আইএমএল এর ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদের একটি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ কমিটি গঠনে অনিয়ম ও নিয়োগের সাক্ষাৎকারে প্রার্থীর সাথে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. এবিএম রেজাউল করিম ফকিরের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন ভুক্তভোগী এক চাকরিপ্রার্থী।
সূত্র জানায়, গত ৯ এপ্রিল আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ‘অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ শূন্যপদ পূরণের জন্য লিখিত, ব্যবহারিক (কম্পিউটার) ও মৌখিক অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক অংশের পরীক্ষায় পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে পরিচালক এবিএম রেজাউল করিম এক প্রার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণ ও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।
নিয়োগ বোর্ডের অন্তত তিন জন শিক্ষক ভুক্তভোগী প্রার্থীর সাথে পরিচালকের দুর্ব্যবহারের কথা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেন। তারা বলেন, তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবে এমন কিছু বিষয়ে কথা বলেন, যা ভাইভা বোর্ডে অপ্রত্যাশিত।
এদিকে, যে বোর্ডের মাধ্যমে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেটির গঠন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই নিয়োগটি সম্পন্ন করার জন্য ইন্সটিটিউটের ‘কো-অর্ডিনেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট-সিএন্ডডি’ সভায় চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের বোর্ডে পূর্বে থেকে থাকা অধ্যাপক সাইদুর রহমান, শামীম বানু ও আবসার কামালকে বহাল রেখে সেই সাথে ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনসারুল আলমকে সংযুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, সিদ্ধান্তটি উপাচার্যের কাছে পাঠানোর আগে সেখান থেকে ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, নিজের পছন্দমত প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে এমনটি করেছেন পরিচালক অধ্যাপক ড. এবিএম রেজাউল করিম ফকির। নিয়মানুয়ী একটি সভার সিদ্ধান্ত পরবর্তী সভায় ‘নিশ্চিতকরণ’ করার কথা থাকলেও সেটি না করেই উপাচার্য কর্তৃক তা অনুমোদন করিয়ে এনেছেন। যদিও নিশ্চিতকরণের আগে এটা কার্যকর হয় না। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরাও তাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
ইন্সটিটিউটের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই মুহূর্তে যিনি পরিচালকের দায়িত্বে আছেন, তিনি জাপানিজ ভাষা প্রোগ্রাম থেকে এসেছেন। তিনি দেড় বছর ধরে আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের ইংরেজি ভাষার শিক্ষকদের উপর চরম আক্রোশ পোষণ করছেন। যে প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তিনি ইন্সটিটিউট থেকে ইংরেজি ভাষায় মাস্টার্স (ইএলটি) করেছেন। এছাড়াও আইএমএলে পাঁচ বছর খণ্ডকালীন হিসেবে কাজ করেছেন। ইন্সটিটিউটের সাবেক একজন পরিচালক তাকে উপযুক্ত পদে নিয়োগের সুপারিশও করেছিলেন। অন্যদিকে, যাকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্নাসের পর ফরাসি ভাষা থেকে এক বছরের জুনিয়র কোর্স করেছিলেন। ছয় মাস আগে তাকে খণ্ডকালীন নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে, অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পরিচালক অধ্যাপক ড. এবিএম রেজাউল করিম ফকির।
অন্যদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাযথভাবে একটি কমিটি অনুমোদন হয়ে গেছে কিনা এবং সেই কমিটির ফর্মেশন ঠিক আছে কিনা। সেটা দেখলেই বিষয়টি বোঝা যাবে। আভ্যন্তরীণ এত কথা শোনার কোনো কারণ নাই।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা