সংস্কারবিহীন কোনো নির্বাচন জামায়াতে ইসলামী গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। গতকাল জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত জুলাই-আগস্টের শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ডা. তাহের বলেন, সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান না হওয়ায় কেউ কেউ জুলাইয়ের সফলতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তবে আমাদের দৃষ্টিতে এটি ছিল এক মহান অর্জন, একটি স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় জানানো এবং মানুষকে মুক্ত করা। জুলাই ব্যর্থ হয়েছে এ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব এমন এক ঐক্য তৈরি করেছে, যেখানে ভিন্ন আদর্শের দলগুলোও এক মঞ্চে এসেছে। জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন। স্বৈরাচারী মানসিকতা এখনো শেষ হয়ে যায়নি, তবে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সেই শক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা হবে। নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। না হলে বাংলাদেশ এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এমন পরিস্থিতিতে এদেশের মানুষ আবারও লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবে। সংস্কারবিহীন কোনো নির্বাচন জামায়াতে ইসলামী গ্রহণ করবে না। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে কথা না বলে কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এই সরকারের উচিত হবে না। রাজনৈতিক নেতারা শুধু নির্বাচনের জন্য কথা বলছেন; কিন্তু বিচার ও কাঠামোগত সংস্কারের বিষয়ে নীরব।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা হয়। সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে জামায়াতে নায়েবে আমির, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। সভায় আশা প্রকাশ করা হয়, উভয় দল আগামী দিনে জাতীয় সংকট মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের কয়েকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দেশের সব ছোটবড় দলের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে আমরা উভয় দলই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে আয়োজনের দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া স্থানীয় সরকারব্যবস্থা অকার্যকর থাকায় জনগণ নানান সমস্যার সম্মুখীন এবং নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে। যদি নির্বাচনের আগে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে একমত পোষণকারী সব দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এসব দাবি আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি নুরুল হক নুর, মুখপাত্র ফারুক হাসান এবং উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, আবদুজ জাহের, হাবিবুর রহমান রিজু ও রবিউল হাসান।