জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান হৃদয় স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ জানানো হয়।
এর আগে, গত ১৬ ও ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলে শিক্ষার্থী সায়েম হাসানকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে নিপীড়ন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের নীরবতায় বাধ্য হয়ে সায়েম আদালতে মামলা করেন। এছাড়া, গত ১৩ আগস্ট মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ইমনের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে ৪১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরমান খান যুব’র বিরুদ্ধে। নির্যাতনের সময় তার পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজ দলীয় নেতা হওয়ার পরেও ছাত্রলীগ নিপীড়নকারীকে বাঁচাতেই তৎপর ভূমিকা পালন করছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারহীনতার দীর্ঘ সংস্কৃতি ছাত্রলীগকে দিনকে দিন আরো বেপরোয়া করে তুলছে। ক্ষমতাকাঠামো টিকিয়ে রাখতে ছাত্রলীগ ও প্রশাসন আজ যৌথ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, যার ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের কার্যক্রম এখন শুধুই লোকদেখানো এবং অকার্যকর 'তদন্ত কমিটি' গঠনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কাজেই, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।
বিবৃতিতে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলা হয়, আবাসিক হলগুলোতে আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি এখন দৈনন্দিন ঘটনায় পরিনত হবার পথে। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী হয়েও আবাসিক হলে টর্চার সেল পরিচালনা করার মতো ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকিস্বরূপ। এগুলো ক্ষমতার অসুস্থ বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনোরকম সহিংসতার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। সকল আবাসিক হল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সুরক্ষিত করতে হবে, অছাত্রদের হল থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং গণরুম-গেস্টরুম প্রথা বাতিল করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল