‘হাড় নেই চাপ দেবেন না’—চার বছর আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) এই লেখাটি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এবার আবারও অভিন্ন লেখা আলোচনায় এসেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী–গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীর মাথায় অপারেশনের পর ব্যান্ডেজে লেখা হয়েছে একই সতর্কবাণী।
২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর চমেকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিব মাথায় গুরুতর আঘাত পান। ৩১ অক্টোবর তাঁর মাথায় অপারেশন করা হয়। তখন খুলি রেখে দিয়ে ব্যান্ডেজে লেখা হয়েছিল—‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। তিনি পরে সুস্থ হন।
প্রায় চার বছর পর অনুরূপ ঘটনা ঘটল চবিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া (২৪) সংঘর্ষে আহত হন এবং তাঁর মাথার খুলি রেখে অপারেশন করা হয়। পরে খুলি যথাস্থানে বসানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন এবং অনেকটাই সুস্থ হয়ে কথা বলতে পারছেন।
একই ঘটনায় চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম (২৪) মারাত্মকভাবে আহত হন। দুই দফা সিটি স্ক্যানে তাঁর মাথায় জমাট রক্ত ধরা পড়ে এবং খিঁচুনি হচ্ছে। গত মঙ্গলবার পার্কভিউ হাসপাতালে গঠিত মেডিকেল বোর্ড অভিভাবকের সম্মতিক্রমে তাঁর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে চবি কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের সিদ্ধান্তে তাঁকে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ইমতিয়াজের বাড়ি কুমিল্লায়, পরিবার থাকে বগুড়ায়। তাঁর বাবা আমির হোসেন, মা শাহনাজ আমিন ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে এসেছেন।
পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “চবি কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনরা ইমতিয়াজকে ঢাকার সিএমএইচে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মাথায় রক্ত জমাট হয়ে আছে বলে চিকিৎসকদের ধারণা।”
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি বাস ও নয়টি অ্যাম্বুলেন্সে করে চমেক হাসপাতালসহ নগরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক