শনিবার, ১৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য

একাত্তরের স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর সংঘটিত হয়েছিল এক অবর্ণনীয় নির্যাতন এবং গণহত্যা। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্মিত এই ভাস্কর্যটিতে তার বাস্তবচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ভাস্কর্যটির স্থপতি ভাস্কর রাসা। এটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম খান। ভাস্কর্যটির একাংশের নাম মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি আর অন্য অংশের নাম একাত্তরের গণহত্যা। ভাস্কর্যটিতে দুটি দিক রয়েছে- একটি প্রতীকী আর অন্যটি বর্ণনামূলক। মুক্তিযুদ্ধে কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেছিলেন। অন্যদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা মেতে উঠেছিল গণহত্যায়।

এই ভাস্কর্যটিতে সেই চিত্রসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যাবে একপাশে একাত্তরের গণহত্যা অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। ভাস্কর্যের নিচে রয়েছে পানিভর্তি ফোয়ারা। এটি হলো নদীমাতৃক বাংলাদেশের চিহ্ন। পানির ভিতর রয়েছে বর্ণমালা, এটি মাতৃভাষার চেতনার প্রমাণ। '৫২-এর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার মানুষের মাঝে স্বাধীনতার ভাবনা আসে। আর বাংলার কাদামাটির সংমিশ্রণে মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই বাংলার মাটি, মানুষ আর ভাষা একাকার হয়ে ভাস্কর্যটি উপরে উঠতে শুরু করেছে। একাত্তরের গণহত্যা বিশ্বব্যাপী একটি নিন্দনীয় কাজ। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ও বেদনার জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ২৫ মার্চের কাল রাতকে। ভাস্কর্যে ইয়াহিয়া খানের মাতাল অবস্থা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যাকাণ্ড চালানোর দৃশ্য বাস্তবরূপে প্রতিভাত হয়েছে। গর্ভবতী মাকে অত্যাচার করে হত্যা করার দৃশ্যও তুলে ধরা হয়েছে ভাস্কর্যটিতে। পাকিস্তানিদের গণহত্যার বিপরীতে বাংলার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের চিত্রও শিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন দক্ষ হাতে। মুক্তিযোদ্ধারা রাইফেল হাতে যুদ্ধ করছে সেই দৃশ্যও দেখা যায়। সাঈদ মাহাদী, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

 

সর্বশেষ খবর