শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

নান্দনিক ভাস্কর্য

নান্দনিক ভাস্কর্য

মুক্তবাংলা

মুক্তবাংলা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক ভাস্কর্য 'মুক্তবাংলা'। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে। আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের আঙ্গিকে ১৯৯৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রশাসন ভবনের পূর্ব পাশে স্থাপিত হয় এই 'মুক্তবাংলা'। খ্যাতিমান ডিজাইনার রশিদ আহমেদের নকশার ভিত্তিতে একে অপরূপ সৌন্দর্যে রূপ দেওয়া হয়। 'মুক্তবাংলা'র সাতটি স্তম্ভ সংবলিত গম্বুজের ওপর রয়েছে দৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার রাইফেল, যা সাত সদস্যের মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভার প্রতীক। প্রতিটি স্তম্ভ বিস্তৃত প্রসারিত হাত ধরাধরি উল্লসিত অবয়বে ইসলামি স্থাপত্য ভিত্তিক আর্চ রচিত, চোখে লাল সূর্য উদয়ের প্রত্যাশা, সর্বনিম্নে বিস্তৃত সিরামিক বড় ইট লাগাতর আন্দোলনের নির্দেশক। উপর থেকে চতুর্থ ধাপে লাল সিরামিক ইট আন্দোলন ও যুদ্ধের প্রতীক, দ্বিতীয় ধাপে কালো পাথর শোক ও দুঃখের প্রতীক, তৃতীয় ধাপে সাদা মোজাইক সন্ধি ও যোগাযোগের প্রতীক এবং বেদির মূল মেঝে সবুজ মোজাইক নীল টাইলস শান্তির প্রতীক। সম্পূর্ণ অবকাঠামোটি সাতটি আর্চ সংবলিত একটি অর্ধ উদিত (উদীয়মান) সূর্য।

 

ক্যাম্পাসভিত্তিক সর্ববৃহৎ শহীদ মিনার

প্রতিষ্ঠার ৩২ বছর পর ২০১১ সালে প্রগতিশীল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মহাজোট সরকারের সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয় একটি পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার। এটি দেশের ক্যাম্পাসভিত্তিক সর্ববৃহৎ শহীদ মিনার। ক্যাম্পাসভিত্তিক সর্ববৃহৎ শহীদ মিনারটির মূল বেদি থেকে ১১৬/৭৫ ফুট (দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ) মাটির ওপর থেকে মূল বেদি ৯ ফুট উপরে এবং উচ্চতা ৪৫ ফুট। তিন পাশ দিয়ে ওঠার জন্য সুন্দর কারুকার্য খচিত সিরামিক ইট দিয়ে তৈরি সিঁড়ি। মূল বেদিতে অতি সহজে পঙ্গু ও প্রতিবন্ধীরা যাতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে পারে সে জন্য র্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। মূল বেদির মধ্যখানে লাল রঙের প্যাটার্ন রস্টান দিয়ে আবৃত। শহীদ মিনারটির মূল আয়তন ৪০০/২০০ বর্গফুট। মূল এরিয়ার চতুর্দিক দিয়ে স্থায়ীভাবে বক্স লাইটিং ও সার্চ লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। শহীদ মিনারটি পূর্ণাঙ্গভাবে নির্মিত করতে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রকৌশল অফিস। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভিতরে ৩০০ ফুট দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত।

 

ইবির শহীদ স্মৃতিসৌধ

'৫২-র ভাষা আন্দোলন, '৭১-এর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক সংগ্রামের শহীদদের স্মরণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০০১ সালে তাৎপর্যপূর্ণ শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী হাশেম খান এবং প্রখ্যাত স্থাপত্যবিদ রবিউল ইসলামের দেওয়া মডেল ও স্থাপত্য কর্মের ভিত্তিতে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হয়। '৫২-সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা লাভের মূল ধারা ও অতীতের সব ঘটনাকে স্মরণ রাখতে যথাক্রমে ৩০ ফুট, ৪২ ফুট ও ৫২ ফুট উচ্চতায় ২ ফুট ৬ ইঞ্চি পুরু বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের সংমিশ্রণে এই স্মৃতিস্তম্ভটি স্থাপন করা হয়েছে। ৭১ ফুট উঁচু পরিসরে ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতাবিশিষ্ট ইটের চত্বরে এ স্তম্ভটি স্থাপিত। মাঝখানে ২১ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট জাতীয় পতাকার দণ্ড এবং দুই পাশে ১০ ফুট উচ্চতার ৩৮ ফুট ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের বাংলাভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা বিষয়ক (দুটি) দেয়ালচিত্র সনি্নবেশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মরমী কবি লালন শাহ, পাগলা কানাই ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাণী সংযোজন স্মৃতিসৌধটি অর্থবহ করে তুলেছে।

 

সর্বশেষ খবর