হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আলোচিত কিশোরী বিউটি আক্তার হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন তার দুঃসম্পর্কের চাচা আওয়ামী লীগ নেতা ময়না মিয়া। এছাড়া বিউটিকে ধর্ষণের মূল অভিযুক্ত বাবুল মিয়াও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পাশাপাশি বিউটির নানি ফাতেমা বেগমের জবানবন্দী আদালত রেকর্ড করেছে। আদালতের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেওয়া হয়।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর ওহিদুজ্জামান পিপিএম।
চাচা ময়না মিয়া ব্রাহ্মনডোরা ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর ওই ইউনিউনের ইউপি সদস্য ধর্ষণের প্রধান অভিযুক্ত বাবুল মিয়ার মা কলম চান।
এদিকে, জবানবন্দীর বিষয়ে আজ প্রেস ব্রিফিং করা হতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশের একটি সূত্র। এর আগে, গত সোমবার বাবুল মিয়াকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
উল্লেখ, গত ২১ জানুয়ারি বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়াসহ তার সহযোগীরা। তাকে অপহরণ করে বিভিন্ন স্থানে রেখে ধর্ষণ করে লম্পট বাবুল। এ ঘটনার প্রায় ১ মাস পর পর বাবুল মিয়া কৌশলে বিউটিকে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ১ মার্চ বিউটি আক্তারের পিতা সায়েদ আলী বাদী হয়ে লম্পট বাবুল ও তার মা ব্রাহ্মনডোরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এরপর আসামিদের হুমকিতে গত ১৬ মার্চ বিউটিকে তার নানীর বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন বিউটি আক্তারেরর লাশ স্থানীয় হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা এ দফায় আবারও তাকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করা হয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে প্রচার হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এরপর বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে পরদিন তার পিতা বাদী হয়ে হয়ে বাবুল মিয়াসহ ২ জনের নাম উলেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা ইউপি সদস্য কলম চান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইল নামে এক যুবককে আটক করে।
এ ঘটনার পর ২৯ মার্চ হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। এরপর র্যাব ৩১ মার্চ সিলেট থেকে প্রধান অভিযুক্ত বাবুলকে আটক করে।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব