ভূমিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তার সংসদীয় এলাকা আনোয়ারায় জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি করে নেয়া ভিটে-বাড়ি ফেরত পাচ্ছেন আনোয়ারার শতবর্ষী পণ্ডিত নিরঞ্জন চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার দুপুরে আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর কার্যালয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরঞ্জন চক্রবর্তীর পুত্রবধূ শীমা চক্রবর্তী ও নাতনি পাপিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃণাল কান্তি ধর, ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার দেব, আনোয়ারা থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব মিল্কী।
উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নির্দেশে উভয়পক্ষকে নিয়ে আমরা সমঝোতায় এসেছি। পণ্ডিত নিরঞ্জন চক্রবর্তীর জমি ফেরত দেয়া হচ্ছে। যারা জোর করে এই বৃদ্ধ ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দলিলে টিপসই ও স্বাক্ষর নিয়েছে তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। সমঝোতায় না আসলে যে তাদের পরিণাম ভাল হবে না এরা এই কয়েকদিনে তা বুঝেছে। স্থানীয় সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে গণমাধ্যমের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় আনোয়ারার জয়কালী হাট সরস্বতী মন্দির সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ৭-৮ জনের একটি দল অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে শয্যাশায়ী প্রায় শতবর্ষী নিরঞ্জন পণ্ডিতের বাড়ি প্রবেশ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে ছেলে-মেয়েকে জিম্মি করে নিরঞ্জন পণ্ডিতের ভিটেবাড়ির জাল দলিলে তার টিপসই এবং সাক্ষী হিসেবে ছেলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রণব রঞ্জন চক্রবর্তীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। স্বাধীনতা সংগ্রাাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে আনোয়ারার ওই বাড়িটি ছিল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ঠিকানা। বিষয়টি পরেরদিন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ জনমানসে প্রতিবাদের ঢেউ ওঠে। এরপর প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসে ওই পরিবার।
পরবর্তীতে ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর হস্তক্ষেপে থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপর বাড়ি-ভিটে রেজিস্ট্রি ও দখলে নেয়া ব্যক্তিরা সমঝোতায় আসতে বাধ্য হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন