কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্টেই ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব ছুটছেন। কৌশলে দেশের বিভিন্ন শহর ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করছেন রোহিঙ্গারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে ম্যানেজ করে এবং প্রভাবশালীদের সহায়তায় নিজেদের পরিচয় গোপন করে এসব পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছেন রোহিঙ্গারা। তারপর সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব ছুটছেন তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশই সেখানে অবৈধ বসবাস শুরু করে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বলে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এতে সৌদি শ্রম বাজারে বারে বারে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে বলে জানান কয়েকজন সৌদি প্রবাসী।
এদিকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরব পাড়ি জমানোর সময় সম্প্রতি শতাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ অন্যান্য বিমান বন্দরেও এই আটকের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২৫ মে রাতেও শাহজালাল বিমানবন্দরে ৩ নারীসহ ৭ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। বিদেশে গিয়ে রোহিঙ্গারা চুরি, ডাকাতিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার ফলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে জনশক্তি রফতানি ও বিদেশে কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস সৌদি আরবে বাংলাদেশেরভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও জনশক্তি রফতানি কমে গেছে। এতে দিন দিন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও কমে যাচ্ছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
অবশ্য এসব অভিযোগের ব্যাপারে রোহিঙ্গা নেতা আবু সিদ্দিক জানান, কিছু রোহিঙ্গা বিদেশে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় সৌদি আবর যাচ্ছেন এ কথা ঠিক, তবে তা সংখ্যায় সামান্য। এতে উদ্বেগজনক কিছু হচ্ছে না।
এ বিষয়ে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, সত্যিকার অর্থে নতুন-পুরনো মিলে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানান প্রান্তরে। সেখানে তারা স্থানীয় লোকদের শেল্টারে জাতীয় পরিচপত্র কিংবা পাসপোর্ট তৈরি করে ফেলছে। ফলে তাদের বিদেশ গমন ঠেকানো যাচ্ছে না। সৌদি আরব যেহেতু রোহিঙ্গাদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, সেহেতু সেখানেও গিয়েও তারা কোনো না কোনো শেল্টার বা সহযোগিতা পেয়ে যায়। এ কারণে হয়তো ওমরা ভিসায় কৌশলে সৌদি পাড়ি জমাচ্ছে রোহিঙ্গারা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার