চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের অবহেলিত সেই সোনাই ত্রিপুরা পাড়ার ৬৭ শিক্ষার্থী পেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা বৃত্তির টাকা। ৬৭ জন শিক্ষার্থীকে মোট পাঁচ লাখ টাকার বৃত্তি দেওয়া হয়।
শনিবার দুপুরে সোনাই ত্রিপুরা পাড়ার ৬৭ শিক্ষার্থীর ঘরে গিয়ে এসব বৃত্তির টাকা তুলে দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীন।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সোনাই ত্রিপুরা পাড়ার অবস্থান চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি মহাসড়ক থেকে ৮ কিলোমিটার ভেতরে পাহাড়ের পাদদেশে। এখানে মোট ৫২টি পরিবার বাস করে। এর মধ্যে ৬৭ শিক্ষার্থীকে পাঁচ লাখ টাকার বৃত্তি দেয়া হয়। প্রাথমিকের ৪০ শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে ২০০ করে ২৩ মাসের জন্য এককালীন ৪ হাজার ৬০০ (প্রতি শিক্ষার্থী), মাধ্যমিকের ২০ শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য ৫০০ টাকা করে এককালীন ১২ হাজার (প্রতি শিক্ষার্থী) টাকা করে এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ৩ শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে এককালীন ১৯ হাজার ২০০ (প্রতি শিক্ষার্থী) টাকা করে বৃত্তি দেয়া হয়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা বৃত্তি প্রদানটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। সোনাই ত্রিপুরা পাড়ার প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে এক মাস আগে শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। আজ সকালে প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে বৃত্তির টাকা তুলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের হাতে বৃত্তির পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়।’
প্রসঙ্গত, সোনাই ত্রিপুরায় নাগরিক জীবনের ছোঁয়া ছিল না। অজ্ঞাত রোগেই আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ মারা যায় চার শিশু। ছিল না বিদ্যুৎ। মোবাইলে চার্জ দিতে হতো টাকা দিয়ে। প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ। কিন্তু ছিল না কোনো সড়ক। তবে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে বদলে গেল সেই মনাই ত্রিপুরাপাড়া। এখন সেখানে পৌঁছেছে সৌরবিদ্যুৎ, তৈরি হয়েছে সড়ক, আটটি কালভার্ট, আটটি সেমিপাকা বাথরুম। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি গভীর নলকূপ, মন্দিরভিত্তিক স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে তৈরি করা হয়েছে টিনশেড ঘর।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম