ভারতগামী জাহাজের নাবিকদের ল্যান্ডিং পাস নিশ্চিত, শ্রমিকদের খোরাকি ফি, মধ্যবর্তী ভাতাসহ ১৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকরা। মঙ্গলবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। কর্মবিরতি চলাকালে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে পণ্য খালাস এবং দেশের সকল নৌরুটে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন। এনিয়ে গত চার মাসে দুইবার ধর্মঘটে গেলো নৌযান শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৫ এপ্রিল লাইটার জাহাজের শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে গেলে শ্রম অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা ও দাবি পূরণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় নৌযান শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলো। ওই যৌথ সভায় ৪৫ দিনের মধ্যে তখনকার ১১ দফা দাবি পূরণের সিদ্ধান্ত ও চুক্তি স্বাক্ষরের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিলো। নৌযান শ্রমিক সংগঠনের বেঁধে দেওয়া ৪৫দিন সময় পার হয়ে আরো প্রায় আড়াই মাস পার হওয়ার পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় ফের কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে কর্ণফুলী নদীতে প্রায় দেড় হাজার লাইটার জাহাজ, বার্জ, অয়েল ট্যাংকার অলস বসে আছে বলে জানা যায়। তবে যাত্রীবাহী জাহাজের মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বুধবার দুপুরে। সারাদেশের অন্যান্য নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ১৫ দফা দাবিতে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। তাই বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছি। তিনি বলেন, ১৫ দফার মধ্যে অন্যতম দাবিগুলো হচ্ছে- প্রত্যেক নৌযান শ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিসবুক প্রদান, প্রত্যেক নৌ শ্রমিকের জন্য বাধ্যতামূলক জীবন বীমা করা, কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারি শ্রমিক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, ভারতগামী নৌযানে কর্মরত শ্রমিকদের প্রতিমাসে খাদ্য ভাতা প্রদান, মাস্টার/ড্রাইভারকে ৫ হাজার ভারতীয় রূপি প্রদান, অন্যান্য স্টাফদের ৪ হাজার ৫০০ রূপি প্রদান, চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারি কোস্টার, ট্যাংকারসহ সকল প্রকার নৌযান শ্রমিকদের প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা প্রদান।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাসে আপাতত বন্ধ থাকলেও বন্দরের মূল জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিংসহ অন্যান্য কাজ অব্যাহত আছে। লাইটার জাহাজের সঙ্গে বন্দরের জেটির সরাসরি সংযোগ না থাকলেও নৌযান শ্রমিকদের এই ধর্মঘট সামগ্রীক নৌবানিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার