জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। গতকাল কর্মসূচির প্রথম দিন দেশের রাজস্ব আদায়কারী সবচেয়ে বড় এ কাস্টম স্টেশনে শুল্কায়ন কার্যক্রম হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এদিকে কাস্টম হাউসে অচলাবস্থার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এরই মধ্যে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ধীরগতি তৈরি হয়েছে। জাহাজে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক থাকলেও বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি কমেছে। জাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানো এবং বন্দর থেকে আমদানি পণ্য ডেলিভারি নিতে কাস্টমসের অনুমতির প্রয়োজন হয়। দেশের সমুদ্র কেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানির ৯২ শতাংশ হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। কাস্টমসে আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরেও পুরোপুরি অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্দর-সংশ্লিষ্টরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল কাস্টম হাউসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দেননি। ফলে বিল অব এন্ট্রি দাখিলসহ আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আগে অনুমতি নেওয়া জাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ চলছে। একইভাবে পুরনো নথিপত্রের ভিত্তিতে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে। নতুন করে কোনো ছাড়পত্র মিলছে না। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কাস্টমসে কমপ্লিট শাটডাউন চলতে থাকলে চট্টগ্রাম বন্দরও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এসাইকুডা সার্ভার থেকে ছাড়পত্র পেলেই কেবল জাহাজের কনটেইনার নামানো যায়। কাস্টমসের অনুমতি ছাড়া কোনো জাহাজ বন্দর ত্যাগও করতে পারে না। কাস্টমসের একজন অনবোর্ড কর্মকর্তা পরিদর্শনের পর জাহাজ বন্দরে প্রবেশ ও বন্দর ত্যাগ করতে পারে। আমদানি পণ্য ডেলিভারি নিতে গেলেও কাস্টমসের ছাড়পত্র লাগে। অর্থাৎ কাস্টস হাউসে কাজ না হলে বন্দর অচল হয়ে পড়বে। ঈদের দীর্ঘ ছুটির পর জাহাজ ও কনটেইনার জট সামাল দিতে এমনিতেই বন্দর কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। কাস্টমসের আন্দোলনের কারণে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এক দিন বন্ধ থাকলে দেশের অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি। অনেক দিন ধরেই ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসকে অত্যাবশ্যকীয় বা জরুরি সেবা ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন। এখানে যেন আন্দোলনের কোনো আঁচ লাগতে না পারে। কিন্তু সেই দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়।